দাওয়াত দিয়ে নগদ টাকা নেওয়া বন্ধের দাবি

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি ঈশ্বরদী (পাবনা)
প্রকাশিত: ১২:৪৫ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২৩
দাওয়াত দিয়ে নগদ টাকা নেওয়া বন্ধে মুক্ত আলোচান

অনুষ্ঠানের দাওয়াত দিয়ে উপহার হিসেবে নগদ টাকা নেওয়া বন্ধের দাবি জানিয়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রাইমারি কালচার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (পিসিডিসি) নামে একটি সামাজিক সংগঠন।

শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে পৌর শহরের আলহাজ মোড়ে ‘দাওয়াতের নামে হোটেল বাণিজ্য বন্ধের দাবি’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় তারা এ দাবি জানান।

সভায় বক্তারা বলেন, দাওয়াতের নামে হোটেল বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। খাবার প্যান্ডেলের পাশে টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসে কে কত টাকা ও কী কী উপহার দিলো সেটি লেখা বন্ধ করতে হবে। অনুষ্ঠান শেষে এখন বলতে শোনা যায় কার কত টাকা লাভ বা ক্ষতি হয়েছে। আবার কে কত টাকা দিয়েছে তা নিয়ে পরবর্তীতে গল্প করছে। এতে আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তিরা এক ধরনের হীনমন্যতায় ভোগে। আবার বিত্তশালী ও মধ্যবিত্তদের দেখাদেখি গরীব মানুষরা লাভের আশায় এনজিও থেকে লোন নিয়ে সুন্নতে খাতনা, নাক-কান ফোঁড়ানো, বিয়ের আয়োজন করছে। এমনও দেখা গেছে শখ করে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করে লোকসান হওয়াতে আত্মহত্যার ঘটনা।

উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলুর সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট কলাম লেখক মোশাররফ হোসেন মূসার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- ভাষা শহীদ বিদ্যা নিকেতনের সাবেক প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক হানিফুর রহমান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মাসুদ রানা, পাকশী রেলওয়ে কলেজের প্রভাষক সাদ আহমেদ, গৌরিপুর কলেজের প্রভাষক ফরিদ আহমেদ, ফারুক জাহাঙ্গীর, ফরহাদ হোসেন মোল্লা, বাসদ কর্মী ওসমান গনি।

হানিফুর রহমান বলেন, টাকার বিনিময়ে দাওয়াত খাওয়ার এ রীতি সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে বন্ধ করতে হবে। উচ্চ বিত্ত ও মধ্যবিত্তদের দেখাদেখি অনেক গরীব মানুষ লাভের আশায় লোন ও গরু-ছাগল বিক্রি করে অনুষ্ঠান করছেন। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। সময় এসেছে এসব অনুষ্ঠানের নামে বাণিজ্যি বন্ধ করতে হবে। তবে এ অবস্থার একসময় অবশ্যই পরিবর্তন হবে। সাম্প্রতিক সময় লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু ব্যক্তি দাওয়াতপত্রে লিখে দিচ্ছে কোনো ধরনের উপহার সামগ্রী ও নগদ অর্থ গ্রহনীয় নয়।

দাওয়াত দিয়ে নগদ টাকা নেওয়া বন্ধের দাবি

সাবেক প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক বলেন, আগের দিনে শুধু বিয়ের অনুষ্ঠান হতে দেখা গেছে। তখন শুধু গৃহস্থালি সামগ্রী উপহার দেওয়া হতো। এখন এটা বাণিজ্যে রূপ নিয়েছে। যেহেতু শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সবকিছু বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে। তাই কিছু মানুষ এটিও বাণিজ্যকরণের চেষ্টা করছে। এতে পরিবারে অশান্তি, সামাজিক ঐক্য নষ্ট, ধনী-গরিবের বৈষম্য বেড়ে যাচ্ছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা বলেন, সবচেয়ে বেশি বিপদে আছেন চেয়ারম্যান-মেম্বররা। প্রতিমাসে দাওয়াতের পেছনে একজন চেয়ারম্যানের খরচ হয় সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা। একজন মেম্বারের খরচ হয় প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাসুদ রানা বলেন, এখন থেকে আমাদের উচিত হবে দাওয়াত খেয়ে নগদ টাকা না দেওয়া। তবে বই, ফুল, কখনো গাছের চারা উপহার দেওয়া যেতে পারে।

শেখ মহসীন/এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।