টাকা আত্মসাৎ

দর্শনা পৌরসভার কোষাধ্যক্ষ-সাবেক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০২:৪৫ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২৩

ঠিকাদারের নামে চেক ইস্যু করে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দর্শনা পৌরসভার কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ মো. রুমি আলম ও সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী এস এম আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন ঝিনাইদহের সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রহমান বাদী হয়ে বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে এ মামলা করেন।

মামলার আসামি কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ মো. রুমি আলম চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার ইসলামপাড়ার সৈয়দ কামরুল আলমের ছেলে। আর সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী এস এম আব্দুস সামাদ চুয়াডাঙ্গা শহরের বুজরুকগড়গড়ি এলাকার সিঅ্যান্ডবিপাড়ার এস এম আব্দুল হামিদের ছেলে। তিনি বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভায় কর্মরত।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে দর্শনা পৌরসভা এলাকার দুটি রাস্তা সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। দাখিল করা দরপত্রের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে দর্শনার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের মেসার্স জয়নাল আবেদীন ও কলেজপাড়ার নাজমুল হুদাকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। দরপত্রে দুটি রাস্তা এলজিইডির আইডিভুক্ত ছিল।

ঠিকাদাররা কাজ না করেও প্রকল্প দুটির বাস্তবায়ন দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে চারটি চেকের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা তুলে নেন। ফলে পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি, প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

দুদক সমন্বিত কার্যালয় ঝিনাইদহ সূত্রে জানা গেছে, দর্শনা পৌরসভার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ও বিশেষ বরাদ্দ (জিওবি) অর্থায়নে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুর স্কুল মোড় থেকে স্কুলপাড়া জুড়নের বাড়ি পর্যন্ত পুরোনো কার্পেটিং রাস্তার উন্নয়ন এবং জুড়নের বাড়ি থেকে পৌরসভার সীমানাপ্রাচীর পর্যন্ত পুরোনো রাস্তার উন্নয়নের দুইটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করে। দাখিল করা দরপত্রের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা দক্ষিণ চাঁদপুরের মেসার্স জয়নাল আবেদীনকে ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এবং দর্শনা কলেজপাড়ার মেসার্স নাজমুল হুদাকে ২০ আগস্ট কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

প্রকল্পভুক্ত রাস্তা দুইটি এলজিইডি চুয়াডাঙ্গা সদরের আইডিভুক্ত হওয়ায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বন্যা ও দুর্যোগ পল্লিসড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ওই রাস্তা বাস্তবায়ন করার সুযোগ নেওয়া হয়। কার্যাদেশ মোতাবেক ঠিকাদারেরা কাজ না করা সত্ত্বেও দর্শনা পৌরসভার তৎকালীন উপ-সহকারী প্রকৌশলী এস এম আবদুস সামাদ ভুয়া ভাউচার তৈরি করে প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন দেখিয়ে বিল দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দর্শনা পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সদ্য প্রয়াত মতিয়ার রহমান এবং সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী মো. মজিবর রহমানের যৌথ সইয়ে বিল অনুমোদিত হয়।

বিল অনুমোদনের পর সোনালী ব্যাংক দামুড়হুদা শাখা থেকে চারটি চেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা ইস্যু করা হলেও তারা (ঠিকাদার) কোনো চেক পাননি এবং চেকগুলো ঠিকাদারের ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে (অ্যাকাউন্টপেয়ি) ছিল না। ফলে সৈয়দ মো. রুমি আলম এবং সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী এস এম আবদুস সামাদ পরস্পর যোগসাজশে ওই ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংকের দামুড়হুদা শাখা থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের ঝিনাইদহ জেলা সমন্বিত অফিসের সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রহমান মামলার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরেজমিনে তদন্ত ও দপ্তরের কাগজপত্রে জালিয়াতির তথ্য মিলেছে। তারা এডিবি সাধারণ ও বিশেষ বরাদ্দের (জিওবি) টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবদুস সামাদ ও সৈয়দ মো. রুমি আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।