মন ভরায় এক গম্বুজ মসজিদ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৩:১৬ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৩

প্রায় পাঁচশ বছরের পুরাতন মোঘল আমলের এক গম্বুজ পীরগঞ্জ জামে মসজিদ। চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঠাকুরপুর গ্রাম। স্থানটি বর্তমানে পীরগঞ্জ হিসেবে পরিচিতি। পীরগঞ্জ নামকরণের পেছনে নিহিত রয়েছে ওই বিশাল আকৃতির এক গম্বুজ মসজিদটি।

জানা যায়, ১৬৯৮ সালের দিকে শাহ্ মোহাম্মদ আফতাফ উদ্দিন চিশতী ওরফে আফু শাহ নদী পথে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাথাভাঙ্গা ও নবগঙ্গা বেয়ে চুয়াডাঙ্গার ঠাকুরপুর গ্রামে এসে আস্তানা গাড়েন। তিনি সাধক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-প্রসার যার লক্ষ্য ছিল।

প্রচলিত আছে, খজনা বাকি হলে তাকে জমিদার দরবারে ডেকে নিয়ে যায় প্রজারা। তিনি অলৌকিকভাবে সবার আগে পৌঁছে যান জমিদারের দরবারে। বিষয়টি জানার পর জমিদার আফু শাহকে জমি দান করেন। সেই জমিতে এক গম্বুজ মসজিদ নির্মাণ করেন তিনি।

মন ভরায় এক গম্বুজ মসজিদ

বর্তমানে মসজিদটিতে আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে। দূর-দূরন্ত থেকে সাধারণ মানুষ নামাজ পড়তে আসেন। মসজিদটি প্রাচীন ও ইসলামিক স্থাপত্য নিদর্শন সমৃদ্ধ। মসজিদটিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।

অনেকের ধারণা আফু শাহ অলৌকিক শক্তি দিয়েই মসজিদটি নির্মাণ করেন। জ্বীনদের সাহায্য নিয়ে এক রাতেই মসজিদটি নির্মাণ করেন আফু শাহ।

মন ভরায় এক গম্বুজ মসজিদ

হাতে তৈরি পাতলা ইট আর চুন-সুড়কির গাথুনিতে তৈরি হয় এক গম্বুজ মসজিদ। মসজিদের ভেতরে দুই কাতারে নামাজ আদায় করা যায়। মূল কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখেই বর্তমানে মসজিদটি সংস্কার করে বড় পরিসরে তিন গম্বুজ করা হয়েছে। ১২ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠেছে পীরগঞ্জ মসজিদটি। নারীদের নামাজ পড়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন।

স্থানীয়দের ধারণা মসজিদটি রাতের যে কোনো সময় অলৌকিকভাবে নির্মাণ হয়েছে। কারণ সকালে উঠে মসজিদটি দেখা যায়।

মন ভরায় এক গম্বুজ মসজিদ

চুয়াডাঙ্গা কুলচারা গ্রামের খাইরুল ইসলাম বলেন, মরুব্বিদের মুখে শুনেছি এক গম্বুজ পীরগঞ্জ জামে মসজিদটি এক রাতে নির্মাণ হয়েছে। মসজিদটি অনেক সুন্দর। দূর-দূরান্ত থেকে সব বয়সের মানুষ মসজিদটি দেখতে ছুটে আসেন। মসজিদে আসলে মন ভরে যায়।

মসজিদের পার্শ্ববর্তী বসবাসকারী আনিস বিশ্বাস বলেন, রাতের যে কোনো সময় অলৌকিকভাবে নির্মাণ হয়েছে মসজিদটি। পূর্বপুরুষরা মসজিদটি দেখভাল করতেন। এখন আমরা করছি।

মন ভরায় এক গম্বুজ মসজিদ

পার্শ্ববর্তী বসবাসকারী খাইরুজ্জামান সেতু নামের আরেকজন বলেন, বহুদূর থেকে মানুষ এ মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন। মসজিদটি এ অঞ্চলের আর্শীবাদ হিসেবে আমরা বিবেচনা করি।

পীরগঞ্জ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক তাইজেল মল্লিক বলেন, মসজিদটি স্থানীয়দের দানে চলে। পীরগঞ্জ মসজিদটি প্রাচীনতম। জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করছে। প্রথমে মসজিদটি এক গুম্বুজ বিশিষ্ট ছিল। পরে মূল মসজিদের অবকাঠামো ঠিক রেখে বড় করা হয়েছে। যেন অনেক মানুষ জামাতে নামাজ পড়তে পারে। নারীদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।