প্রার্থীদের প্রচারণায় সরব নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকা


প্রকাশিত: ০৯:৩০ এএম, ১০ মার্চ ২০১৬

নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচরে জোরেশোরে চলছে নির্বাচনী প্রচরণা। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা গণসংযোগ, কর্মী সভা, উঠান বেঠকে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দলীয় নেতা-কর্মী আর সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নিজেকে দলীয় প্রার্থী বলে পরিচয় দিয়ে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তের পাশাপাশি পরিবর্তনের মাধ্যমে চরাঞ্চলে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

সরেজমিনে জেলার সুবর্ণচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, গোটা উপজেলায় পুরোদমে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। কৃষি জমি থেকে শুরু করে দূর্গম বিভিন্ন বাজারে চায়ের দোকানে আড্ডায় সবার মুখে আলোচনার প্রধান বিষয় ভোট। চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের নিয়ে।

মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের আক্তার মিয়ার হাটে কথা হয় ভোটার সোলেমানের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে জানান, ভোট তো সামনে। আরো কয়েকদিন আছে। দেখে শুনে ভোট দিবো। অবশ্যই যোগ্য ও শিক্ষিত হতে হবে।

খানিকটা দূরে হাজী ইদ্রিস বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সেখানেও বিভিন্ন প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা এলাকা। হাট বার থাকায় এ বাজার ছিলো সরগরম। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে নানা ধরনের গান আর স্লোগান দিয়ে করছে মাইকিং। কথা হয় ভোটার নুর হোসেনের সঙ্গে।

তিনি জানান, প্রার্থীরা তো ভোট চাইতে শুরু করেছে। তিনি নৌকা প্রতীক প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এনামকে যোগ্য মনে করলে তার পাশে আরো কয়েকজন ভোটার জানান, তারা যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে বিশেষ করে চরের রাস্তঘাট, শিক্ষাসহ কৃষকের বিভিন্ন ধরেনর সহযোগিতা করবেন তাকেই ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বার বানাবেন।

Noakhali

ভোটারর যেমন প্রার্থীদের নিয়ে নানা ধরনের চিন্তা ভাবনা করছেন তেমনি প্রার্থীরাও বসে নেই। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে তাদের ব্যস্ততাও বেড়ে যাচ্ছে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত উঠান বৈঠক, কর্মী সভাসহ দলীয় কর্মী সমর্থকদের দিয়ে চরের কাঁচা-পাকা রাস্তা দিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে।

মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী এড. এনামুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, তিনি ১৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে এলাকার শিক্ষা থেকে শুরু করে অনেক উন্নয়ন করেছেন। তার অসামপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য তিনি ভোট চাইছেন। এছাড়া এবার আ.লীলের দলীয় প্রতীক নৌকা পাওয়ায় তিনি নিজেকে একজন সৌভাগ্যবান ব্যক্তি বলে দাবি করেন।

সুষ্ঠু ভোট নিয়ে তার কোনো শঙ্কা না থাকলেও তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে চেয়ারম্যান পদে ভোট যুদ্ধে নামা আনারস প্রতীকের মহিউদ্দিন চৌধুরীকে একজন সন্ত্রাসী হিসেবে অভিযোগ করে তিনি বলেন তার (মহিউদ্দিন) কারণে ভোট সুষ্ঠু হবে না।

অপরদিকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তৃণমূলের ভোটাভুটি অগ্রাহ্য করে এনামুর রহমানকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয়েছে। তবে এলাকার মানুষ নৌকা, ধানের শীষ বুঝে না। তার বুঝে বিগত সময়ে যে দলের ত্যাগী ছিলেন এবং যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে তাকেই তারা ভোট দিবেন।

কথা হয় বিএনপি প্রার্থী খায়রুল আনাম সেলিমের সঙ্গে। তিনিও জানান ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে তার মতো ভোটারদেরও সংশয় রয়েছে।

সূবর্নচর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. সাইফুল আলম জাগো নিউজকে জানান, ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৮৩ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৩ হাজার ২৫৩ এবং নারী ভোটার ৭৯ হাজার ২৮৫ জন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ জন। এবং সংরক্ষিত ও সাধারণ পদে ৩৮৩ জন। পাশাপাশি নির্বাচনী আচরনবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সে দিকে কঠিন মনিটরিং করছেন।

এদিকে সূবর্ণচর উপজেলার পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ৮টি ইউনিয়নে আগামী ২২ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে মোট ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮১ জন। তার মধ্যে পুরষ ভোটার ৭৭ হাজার ৭৪৬  এবং নারী ভোটার ৭২ হাজার ১৩৫ জন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫২ জন এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত পদে ৪৭৯ জন। তবে এ উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে আওয়ামীলগ ও বিএনপি থেকে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে ভোট যুদ্ধে মাঠে থাকায় বেশ কয়েকটি সংঘাতের ঘটনা ঘটায় ভোটারগন আতঙ্কে রয়েছেন।

মিজানুর রহমান/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।