ফরিদপুর

প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ‘পাকিস্তান পাড়া’, স্থানীয়দের ক্ষোভ

এন কে বি নয়ন এন কে বি নয়ন ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০৪:৫৮ পিএম, ২৫ মে ২০২৩

ফরিদপুর শহরের আলীপুরের গুরুত্বপূর্ণ একটি মহল্লার নাম ছিল ‘পাকিস্তান পাড়া’। যে দেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সে দেশের নামে এলাকার নাম রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। চার বছর আগে মহল্লার নাম পরিবর্তন করে ‘শাপলা সড়ক’ নামকরণ করা হয়। এরপরও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে ‘পাকিস্তান পাড়া’ লেখায় বিভিন্ন মহলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌর শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মুজিব সড়কের পশ্চিম পাশে কুমার নদের পাড়ে (জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে) মহল্লাটির নাম ছিল ‘পাকিস্তান পাড়া’। চার বছর আগে পৌর কর্তৃপক্ষ নাম পরিবর্তন করে ‘শাপলা সড়ক’ নামকরণ করে। তারপরও এখনো বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ‘পাকিস্তান পাড়া’ লেখা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ‘পাকিস্তান পাড়া’, স্থানীয়দের ক্ষোভ

সরেজমিন দেখা যায়, জননী এক্সপ্রেস, ইউএসবি কুরিয়ার সাভিস, এসআর পার্সেল সার্ভিস, একটি মুদি দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে ঠিকানা হিসেবে ‘পাকিস্তান পাড়া’ লিখে রেখেছেন।

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে ‘পাকিস্তান পাড়া’ নাম ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে জননী এক্সপ্রেস সার্ভিসের শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, “অফিস স্থাপনের সময় স্থানীয়দের কাছে এলাকার নাম জানতে চাইলে তারা এলাকার নাম ‘পাকিস্তান পাড়া’ বলে জানান। এ কারণে আমরা নামটি ব্যবহার করেছি। তবে এটি ঠিক কাজ হয়নি। আমরা সাইনবোর্ড পরিবর্তনের ব্যবস্থা নিয়েছি।’

স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামছুল আরিফিন সাগর জাগো নিউজকে বলেন, ‘এলাকাটির নাম পরিবর্তনের পরও পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। নোটিশ, মাইকিং করা হয়েছে। তবে এখনো যদি কেউ আগের নাম ব্যবহার করেন তাহলে তা দুঃখজনক। এটা মোটেও ঠিক নয়।’

প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ‘পাকিস্তান পাড়া’, স্থানীয়দের ক্ষোভ

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন বলেন, “আমরা দেশের জন্য, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি; পাকিস্তান নাম ব্যবহার করার জন্য নয়। যারা বা যিনি ওই মহল্লার নাম এখনো ‘পাকিস্তান পাড়া’ লিখে প্রচার করছেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু দুষ্টচক্র একাজ করেছে।”

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল ফয়েজ বলেন, এই ধৃষ্টতা যারা দেখিয়েছেন তাদের কোনোভাবেই ক্ষমা করা যাবে না। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছে এর থেকে বড় অপমান আর কী হতে পারে? এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, সাইনবোর্ডগুলো দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন প্রতিষ্ঠানগুলো এমনটি করলো তার কৈফিয়ত নেওয়া হবে।

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।