লিচুর মৌসুমে দিনাজপুরে দেড় লাখ নারীর কর্মসংস্থান

এমদাদুল হক মিলন এমদাদুল হক মিলন , দিনাজপুর দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ এএম, ২৯ মে ২০২৩

দিনাজপুরে চলছে লিচুর ভরা মৌসুম। ১৪ মে থেকে বাগানিরা লিচু ভাঙতে শুরু করেছেন। এতেই ভাগ্য খুলেছে নারীদের। দিনাজপুরের ১৩ উপজেলার লিচুর বাগানগুলোতে প্রায় দেড় লাখ নারীর দেড় মাসের কর্মসংস্থান হয়েছে। সংসার সামলে লিচু বাছাই ও বাঁধাইয়ের কাজ করছেন তারা।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরের ১৩ উপজেলার মাটি ও জলবায়ু লিচু উৎপাদনে উপযোগী হওয়ায় দিনাজপুরে লিচু চাষে রীতি মতো বিপ্লব ঘটেছে। দিনাজপুরে এবার ৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বাগানে ৭ লাখ গাছে লিচু উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ৪৫ হাজার টন।

jagonews24

বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা যায়, চলছে লিচু ভাঙার কাজ। গাছের নিচেই গোল হয়ে বসে লিচু বাছাই ও বাঁধার কাজ করছেন নারীরা। একেকটি বাগানে ২৫-৪০ জন নারী কাজ করছেন।

তারা জানান, গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫০ টাকা করে মজুরি পেয়ে থাকেন। এতে সংসারের কাজের পাশাপাশি দেড় মাসে কমপক্ষে ১১ হাজার ২৫০ টাকা আয় করবেন। যা তাদের বাড়তি চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে। সঙ্গে পরিবারের জন্য পাবেন ঝরে পড়া লিচুও। অনেকে আবার সেই লিচুও বিক্রি করেন।

লিচু চাষি ও ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক হোসেন, সহরাফ হোসেন, লুৎফর রহমান, জাকির হোসেন জানান, লিচুর এ মৌসুমে কমপক্ষে দেড় লাখ নারীর দেড় মাসের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে।

সদর উপজেলার মাসিমপুর এলাকায় লিচু বাগানে কাজ করতে আসা আঞ্জু আরা, মনোয়ারা বেগম, শাহানারা, মৌসুমী, ছাবিয়া, মর্জিনা, সুমি, জাহেদা জানায়, মালেকা হাজেরা জানান, এ কাজ তারা প্রতি বছর করেন। সংসার সামলে সকাল ৭টার সময় আসেন তারা আর দুপুর ২টার দিকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরেন। তবে মাঝে মধ্যে বিকেলে লিচু ভাঙলে বাগানিরা খবর পাঠান। আবারও লিচু বাচাইয়ের কাজ করেন। এ জন্য অবশ্য বাড়তি মজুরি পান।

jagonews24

লিচু বাগানে কাজে আসা আঞ্জু আরা বলেন, আমি প্রতিবছর এ কাজ করি। এতে বাড়তি আয় ছাড়াও লিচু কিনে খেতে হয় না। পরিবারের সবাই লিচু খেতে পারে। কাজের সময় ঝরে পড়া লিচু বাগানিরা আমাদের দিয়ে দেন। কেউ এসব লিচু কিনতে চাইলে বিক্রি করি।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নূর মোর্শেদা রেবেকা সুলতানা জাগো নিউজকে বলেন, চাকরিতে যোগ দান করার পর থেকে দেখি নারীরা লিচুর বাগানে বাচাই ও বাঁধাইয়ের কাজ করেন। কাজ পরিচ্ছন্ন হওয়ায় বাগানি ও ব্যবসায়ীরা নারী শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাতে বেশি আগ্রহী। তবে সরকারি কোনো দপ্তরে লিচু বাগানে কত নারী শ্রমিক কাজ করেন এর কোনো পরিসংখ্যান নেই। এ নিয়ে এখনো কাজ শুরু হয়নি।

এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।