প্রবেশপত্র আটকে টাকা আদায়, কলেজে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
নোয়াখালীর সূবর্ণচরের চরজব্বর ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র আটকে ৬০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে কলেজের ফটকে তালা দিয়ে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে পরীক্ষা বাতিলের হুমকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৬০০ টাকার পরিবর্তে জনপ্রতি ৩০০ টাকা করে আদায়ের সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় চরজব্বর ডিগ্রি কলেজ থেকে বিভিন্ন শাখায় ৫৮১ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন ফরহাদের নেতৃত্বে প্রবেশপত্র আটকে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে দাবি করা হয়। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা।
ইলিয়াস বাদশা নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানায়, দীর্ঘদিন থেকে এ কলেজে অনিয়ম চলে আসছে। রোববার পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র আনতে গেলে শিক্ষকরা ৬০০ টাকা করে দাবি করেন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে কলেজের নানা অভিযোগ এতে যুক্ত হয়। বিষয়টি আমরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জাগো নিউজকে বলেন, এ কলেজে সরকারি ফির বাইরে নানা অজুহাতে বিনা রশিদে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। প্রশংসাপত্র, মার্কশিট, সনদ ও প্রবেশপত্র আটকে আগেও টাকা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া নিয়ম না থাকলেও কলেজের মাঠে গরুর হাট বসিয়ে সেই টাকা শিক্ষকরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন।

দিদার হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে জানায়, আজ (সোমবার) শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে কলেজে তালা লাগিয়ে দিলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন সমঝোতায় বসেন। তিনি পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিলের হুমকি দিয়ে প্রতি প্রবেশপত্রে ৩০০ টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। পরে বাধ্য হয়ে সেই সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি।
তবে টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন ফরহাদ।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কোনো টাকা আদায় করছি না।
তবে ৩০০ টাকা করে কেন নেওয়া হচ্ছে জিজ্ঞেস করলে তিনি ‘সরি’ বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল করিম জাগো নিউজকে বলেন, এ টাকা আদায়ের কোনো বিধান নেই। অভিযোগ পেয়ে অধ্যক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। কলেজের সভাপতি হিসেবে ইউএনওকে বিষয়টি জানাতে পারেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কলেজের সভাপতি চৈতি সর্ববিদ্যা জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে টাকা আদায়ের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডা. মো. আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে অধ্যক্ষ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। আপনারা সবই বোঝেন। বিষয়টি স্থানীয় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) জানাতে পারেন।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/এমএস