ফুলগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

চিকিৎসক-জনবল সংকটে সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ১০:১৬ এএম, ১৫ আগস্ট ২০২৩

চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা। এখানে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসেন প্রায় তিন শতাধিক মানুষ। এতে করে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবাদানকারী সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন প্রায় তিন শতাধিক মানুষ। ১৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে ছয়জন বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণে রয়েছেন। এছাড়া ছয়মাস আগে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক গাজী আবদুল লতিফও বদলি হয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে চলে গেছেন। এতে করে তার পদটিও শূন্য হয়ে আছে। ফলে বদলি ডিউটি হিসেব করলে বাকি ডাক্তার দিয়ে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীর দীর্ঘ সারি। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। রোগীরাও অনেক অপেক্ষা করে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে অন্যত্র সেবা নিতে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

আরও পড়ুন: মির্জাপুরের পাঁচ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের তিনটিতে নেই চিকিৎসক

jagonews24

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা মুন্সিরহাট এলাকার শফিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, নিরুপায় হয়ে রোগীরা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে যেতে বাধ্য হয়। সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার মানুষ।

অন্যদিকে জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ১৮ জন স্বাস্থ্য সহকারীর মধ্যে ছয়জন রয়েছেন। অন্য দুইজন স্বাস্থ্য সহকারী অফিসের কাজে ব্যস্ত। বাকি চারজন দিয়ে ৬ ইউনিয়নের টিকাদান কর্মসূচি ব্যাহত হচ্ছে।

অন্যদিকে গত কয়েক বছর চালক না থাকায় রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটিও পড়ে আছে। এদিকে মেডিকেল টেকনিশিয়ান শ্যামল সরকার বাগেরহাটে নতুন চাকরিতে চলে যাওয়ায় রোগীদের অন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ল্যাবের পরীক্ষা করতে হচ্ছে। নেই ডেন্টাল বিভাগের টেকনিশিয়ানও।

এর আগে হাসপাতালে একদিনে ৯টি স্বাভাবিক প্রসবের কৃতিত্ব অর্জন করেছিল ফুলগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গাইনি চিকিৎসকের বদলির কারণে হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসব কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি বছরের ৪ মার্চ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ২৫ বছরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারিতে সাফল্য অর্জন করেছিল।

আরও পড়ুন: ‘আজ যদি মারা যেতাম আমার পরিবারের কি হতো?’

একদিনে ৯টি ও পরে ৬টি নরমাল ডেলিভারির কৃতিত্ব অর্জনের ৩-৪ মাসের মাথায় গাইনি চিকিৎসকের বদলি হয়ে যাওয়ায় এ সেবা থেকেও বঞ্চিত ফুলগাজীবাসী।

ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শূন্যপদের তথ্যও দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিমাসে গড়ে ৮০-৯০টি ডেলিভারি হতো। বর্তমানে গাইনি কনসালটেন্ট না থাকায় এ সেবা বন্ধ রয়েছে।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।