কবরস্থানের বেহাল দশা

ঠিকমতো গোসল-জানাজাও হয় না বেওয়ারিশ মরদেহগুলোর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ০৪:৩৫ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২৩

বেওয়ারিশ মরদেহের ঠিকানা ফেনী পৌর কবরস্থান আজ নিজেই যেন বেওয়ারিশ। ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে পুরো কবরস্থান। সন্ধ্যা হলেই মাদকসেবীদের আড্ডা বসে কবরস্থানটিতে। পৌরসভা থেকে এটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্তরাও এক্ষেত্রে উদাসীন।

জানা গেছে, ফেনী পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি না থাকায় বেহাল দশায় রয়েছে ফেনীর সুলতানপুরে অবস্থিত ৫৫ বছরের পুরোনো কবরস্থানটি। এটি এখন পরিণত হয়েছে ঝোপঝাড়ে। সীমানা প্রাচীর ও পর্যাপ্ত আলো না থাকায় সন্ধ্যা হলেই মাদকসেবীদের মিলন মেলায় পরিণত হয় কবরস্থানটি।

ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর এলাকায় ১৯৬৬ সালে তৎকালীন ফেনীর মহকুমা হাকিম এ জেড খান (সিএসপি) তৎকালীন মুসলিম ভেরিয়েল বোর্ড ফেনীর মালিকানাধীন এ মুসলিম কবরস্থানটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে এটি ফেনী পৌরসভার মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণাধীন পৌর কবরস্থানে পরিণত হয়।

ঠিকমতো গোসল-জানাজাও হয় না বেওয়ারিশ মরদেহগুলোর

স্থানীয়রা জানায়, প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২-৪ জন অজ্ঞাত মরদেহ এখানে দাফন করা হয়। কিন্তু মরদেহ দাফনের কোনো নিয়ম-নীতি পালন করা হয় না। মরদেহ ফেনী পৌরসভার ময়লার গাড়িতে করে আনার পর পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা দায়সারাভাবে দাফনের কাজ সম্পন্ন করেন।

এখানে কবর দেওয়ার যে নিয়ম রয়েছে তা কিছুই মানা হয় না। প্রায় কবরই সামান্য মাটি খুঁড়ে কোনো রকমে মাটিচাপা দেওয়া হয়। মরদেহের গোসল দেওয়া হয় না। পরিমাণ মতো বাঁশ বা চাটাইও দেয় না। দীর্ঘদিন সংস্কার না করার ফলে ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে এখানকার বেশিরভাগ জায়গা।

ঠিকমতো গোসল-জানাজাও হয় না বেওয়ারিশ মরদেহগুলোর

কথা হয় ফেনী পৌরসভা থেকে কবরস্থান রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন কবরের জায়গা সংস্কার না করার ফলে ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে এখানকার বেশিরভাগ স্থান। এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

আলী আরও জানান, এখানে মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর দেওয়া খাটিয়া থাকলেও পানির ব্যবস্থা নেই। আমি একা, তাই সম্ভবও হয় না। কখনো কখনো জানাজার নামাজের জন্য লোক পাওয়া যায় না, তাই অনেক সময় জানাজা দিতে পারি না।

ঠিকমতো গোসল-জানাজাও হয় না বেওয়ারিশ মরদেহগুলোর

এ বিষয়ে ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, বর্ষাকাল হওয়ায় ঝোপঝাড় বেড়ে গিয়েছিল। সেগুলো এরইমধ্যে পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ অন্যান্য যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বেওয়ারিশ মরদেহ সম্পর্কে জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান বলেন, যে মরদেহগুলোর নাম-ঠিকানা কিছুই পাওয়া যায় না ও ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমেও কোনো তথ্য মেলে না, সেই মরদেহগুলো বেওয়ারিশ হিসেবে পৌরসভার মাধ্যমে পৌর কবরস্থানে দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা হয়।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।