কুমিল্লায় সেই ১৬ কবর নিয়ে যা জানা গেলো

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৩

কুমিল্লার দেবীদ্বারে একই স্থানে হঠাৎ করে নতুন ১৬টি কবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এই কবরগুলোতে কাদের দাফন করা হয়েছে তার কিছুই জানে না এলাকাবাসী।

সম্প্রতি দেবীদ্বার পৌরসভার নিউমার্কেট এলাকার মোল্লাবাড়ি পুকুরপাড়ের গোরস্থানের পাশে কবরগুলো এলাকাবাসীর চোখে পড়ে। আর হঠাৎ করে এতগুলো নতুন কবরের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে লোকজন তা দেখতে আসছেন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেবীদ্বার পৌরসভার নিউমার্কেট এলাকার মোল্লাবাড়ির রমিজ মোল্লা ও নজরুল ইসলাম মোল্লাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে গত ১৮ আগস্ট নজরুল ইসলাম মোল্লার লোকজন কবরস্থানের বর্ধিত অংশে হঠাৎ করে নতুন মাটি দিয়ে ১৬টি কবর দৃশ্যমান করেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে এর একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে, ১৬টি নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে রমিজ মোল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হানুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও পৌর উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ও সার্ভেয়ারকে সদস্য করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ মোল্লা বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছরেরও আগে দেবীদ্বার নিউমার্কেট মোল্লাবাড়ির পুকুরপাড়ে বাঁশঝাড়ের জমি কিনে মার্কেট তৈরি করে ব্যবসা করে আসছি। আমার মার্কেটের পাশে হঠাৎ এতগুলো নতুন কবর দেখে চমকে উঠেছি।

এ বিষয়ে রমিজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমার পূর্বপুরুষদের কবরস্থান যৌথ মালিকানাধীন সম্পত্তির ওপর করা রয়েছে। গোরস্থানের পাশে আমার ৮৭২ খতিয়ানে ৪২৪৮ দাগে প্রায় ২ শতক জমি রয়েছে। জমির ওপরে থাকা বাঁশঝাড়টি প্রায় ৫০ বছর আগে কেটে পরিষ্কার করে রেখেছি। তাছাড়া আগে এখানে কোনো কবর ছিল না। এরইমধ্যে কে বা কারা আমার জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ওই জমিতে সারিবদ্ধভাবে ১৬টি নতুন কবর তৈরি করে রেখেছে।

তিনি বলেন, আমার ৬৫ বছর বয়সে গোরস্থানের বাইরে আমার জমিতে কাউকে কবর দিতে দেখিনি। বাড়ির মুরুব্বিরাও দেখেননি, তাই বিচলিত হয়ে পড়ি। নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষগুলোর পরিচয় নিশ্চিত হতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।

অন্যদিকে, নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, বিএস খতিয়ানভুক্ত ১৮ শতাংশ জমির ওপর এ গোরস্থান দুইশ বছরের পুরোনো। এখানে নতুন কোনো কবর নেই। আমার দাদা-দাদি, চাচা-চাচি, জেঠা-জেঠিসহ স্বজন ও বাড়ির লোকজনের কবর রয়েছে। আমরা পূর্বপুরুষ ও নারীদের কবরগুলো মাটি দিয়ে উঁচু করেছি।

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জাগো নিউজকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে করছি। খবর পেয়ে সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছি। ঘটনাটি মীমাংসা করতে ইউএনও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা ও এসিল্যান্ড মো. রায়হানুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জাহিদ পাটোয়ারী/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।