‘পাখি ভাইয়ের’ বাড়ি গিয়ে পাখি দেখে এলেন জেলা প্রশাসক

নাসিম উদ্দিন নাসিম উদ্দিন , জেলা প্রতিনিধি, জামালপুর
প্রকাশিত: ০৫:৫২ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

শখের বসে পাখি পালন করে পরিচিতি লাভ করেছেন জামালপুরের নোমান রেজা সুলতানি ওরফে তারা মিয়া (৩৫)। তার খামারে এখন প্রায় ৫০-৬০ প্রজাতির সাত হাজারেরও বেশি পাখি ও কবুতর রয়েছে। সেই খামার দেখতে তার বাড়িতে ছুটে গেলেন নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইমরান আহমেদ।

তারা মিয়া সদর উপজেলার দিগপাইত উপশহরের তিতপল্লা ইউনিয়নের সুলতান নগর গ্রামের মৃত আবু রায়হান সুলতানির ছেলে। তারা মিয়াকে নিয়ে গত ২৯ জুন ‘পাখি ভাই তারা মিয়া’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম। সংবাদটি জেলাজুড়ে সুনাম কুড়ায়। এরপরই বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে তার বাড়িতে ছুটে যান জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ।

জানা গেছে, এক সময় ইরাকে থাকতেন তারা মিয়া। ইরাকের কুর্দিস্তানে অবস্থান করা অবস্থায় শখের বসে স্ত্রী সালমা বেগম ঘরের বারান্দায় তিন জোড়া কবুতর ও এক জোড়া পাখি পালন শুরু করেন। ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখতে থাকায় স্বামীকে দেশে চলে আসতে বলেন। পরে ৭-৮ বছরের প্রবাস জীবন শেষ করে স্ত্রী সালমা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন শুরু করেন তারা মিয়া। ২০-৩০ হাজার টাকা মূলধন খাটিয়ে যুক্ত করেন আরও কিছু পাখি। সেই থেকে শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। এখন খামার থেকে প্রতি মাসে আয় করছেন এক থেকে দেড় লাখ টাকা।

এখন প্রায় ৪০ শতক জমির ওপর পাঁচটি শেডে পাখি ও কবুতর পালন করছেন এ দম্পতি। তাদের খামারে ৫০ থেকে ৬০ প্রজাতির সাত হাজারেরও বেশি পাখি ও কবুতর রয়েছে। এর মধ্যে লুটিনো, কগাটেল, এক্সিবেশন বাজরিগার, জাপানিজ বাজরিগার, লুটিনো বাজরিগার, ক্লাসিক্যাল বাজরিগার, লাভ বার্ড, কাকাতুয়া, ময়না, জাইন কোনোর, জাবা ও ডায়মন্ড ঘুঘু পাখি উল্লেখযোগ্য। প্রকারভেদে প্রতি জোড়া পাখি বিক্রি করছেন ৫০০ থেকে ৮০ হাজার টাকায়।

কবুতরের মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক বোম্বাই, কালো মুক্ষি, হোয়াইট বোম্বাই, জাহিন হোমার, বিউটি হোমার, গিয়া আউল, সাদা আউল, ড্যানিশ কিং, লাহোরি, সিলভার সিরাজী, লক্ষা ইত্যাদি। জাতভেদে প্রতি জোড়া কবুতর ১ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তারা মিয়া।

তারা মিয়া বলেন, জাগো নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার খামারের সংবাদটি প্রকাশ হয়। এতে গত বুধবার সকালে হঠাৎ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফোন করে বলেন আমার বাড়িতে জেলা প্রশাসক আসবেন। পরে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক আমার খামার পরিদর্শন করে প্রায় দুই ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন এবং আমার প্রশংসা করেন।

তিনি আরও জানান, এলাকার অন্য খামারিদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন জেলা প্রশাসক। এছাড়াও কোনো ধরনের ঋণের প্রয়োজন হলে তিনি তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থা করে দেবেন। এছাড়াও তার খামারে ময়ূরের ব্যবস্থাও করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইমরান আহমেদ মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় ২৫ থেকে ৩০ জন সৌখিন পাখির খামারি রয়েছেন। এরা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের পাখি পালন করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছেন। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার তারা মিয়াসহ আরও একটি খামার পরিদর্শন করেছি।

তিনি বলেন, যেহেতু পাখির বাজার অনেক বড়, সেহেতু এসব খামারিদের পাখি পালনে উৎসাহ প্রদানে প্রণোদনামূলক ঋণের ব্যবস্থা করা হবে।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।