দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামার

প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৯:২৬ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঝিনাইদহের মহেশপুর ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার অধীন দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামার ও যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের সাবেক আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুদক।

দুই কোটি ৬৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) মামলাগুলো করেন দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আল-আমিন।

মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন অবসরে গেছেন। বাকি ছয়জন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত। তারা দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারের ২০১৮-১৯ বীজ উৎপাদন বর্ষে ১৩৩ মেট্রিক টন ধান বীজ ও ২১.৮১৮ মেট্রিক টন গম বীজের বিক্রয়মূল্য আত্মসাৎ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রথম মামলায় অভিযুক্তরা হলেন ঝিনাইদহের দত্তনগর করিঞ্চা বীজ উৎপাদন খামারের সাবেক উপপরিচালক ইন্দ্রজিত চন্দ্র শীল ও সাবেক গুদামরক্ষক রেজাউল কবির, যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের সাবেক উপপরিচালক আমিন উল্যাহ এবং যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের সাবেক সহকারী পরিচালক আলী হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ ৬২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করা হয়েছে।

অপর মামলায় দত্তনগর গোকুলনগর বীজ উৎপাদন খামারের সাবেক উপপরিচালক তপন কুমার সাহা, যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের সাবেক উপপরিচালক আমিন উল্যাহ, যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের সাবেক সহকারী পরিচালক আলী হোসেন ও মহেশপুর দত্তনগর গোকুলনগর বীজ উৎপাদন খামারের সাবেক গুদামরক্ষক লিয়াকত আলীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে লিয়াকত আলী বর্তমানে অবসরে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে এক কোটি ৫২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তৃতীয় মামলায় চুয়াডাঙ্গা জীবননগর দত্তনগর পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের সাবেক উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান তালুকদার, যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের সাবেক উপপরিচালক আমিন উল্যাহ, যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের সাবেক সহকারী পরিচালক আলী হোসেন ও দত্তনগর পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের সাবেক ভারপ্রাপ্ত গুদামরক্ষক কামরুল আহসান। কামরুল আহসান বর্তমানে অবসরে আছেন। এদের বিরুদ্ধে ৬৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা সবাই অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতি, প্রতারণা, জালিয়াতি, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামার ও যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র থেকে দুই কোটি ৬৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আত্মসাৎ শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মামলার বাদী যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আল-আমিন।

দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারটি গোকুলনগর, পাথিলা, মথুরা, করিঞ্চা ও কুশাডাঙ্গা মিলে দুই হাজার ৭৩৭ একর জমির ওপর অবস্থিত। ফার্মের আবাদি জমির পরিমার দুই হাজার ২৪৭ একর। এখানে প্রতিবছর প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধান ও গমের ভিত্তিবীজ উৎপাদন করা হয়। এখানে পাঁচজন উপ-পরিচালক ও ৬০ স্টাফসহ প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করেন।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।