শিশুর মরদেহে লবণ মাখিয়ে মাটিচাপা দিয়েও হলো না শেষরক্ষা
পটুয়াখালীর আউলিয়াপুরে বসতবাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি এবং ওই বাড়ির এক শিশুকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতভর অভিযান চালিয়ে শিশু রাতুলের (১০) মরদেহ এবং চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই আসামিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন আউলিয়াপুর ইউনিয়নেন ৫নং ওয়ার্ডের মফেজ মাতুব্বরের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৪৫) এবং জৈনকাঠী ইউনিয়নের সেহাকাঠী গ্রামের এনছান হাওলাদারের ছেলে হানিফ হাওলাদার (৪১)।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রফিংয়ে পুলিশ সুপার ম. সাইদুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার আসামিদের বরাত দিয়ে জানান, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে সদর থানার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ছোট আউলিয়াপুর গ্রামে লিটন ঘরামীর বসতঘর সংলগ্ন ডেকরেটরে চুরির ঘটনা ঘটে। চোর চক্র আগে থেকেই লিটন ঘরামীর ছেলে রাতুলকে সাইকেল কেনার জন্য ১৪ হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে পূর্বপরিকল্পনামতে রাতুলের মাধ্যমে ঘুমের ওষুধ বা চেতনানাশক ওষুধ খাবারে মিশিয়ে তার বাবা, মা ও দাদিকে অচেতন করে। পরে গভীর রাতে ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সামনের দরজা খুলে ঘর সংলগ্ন ডেকোরেটর থেকে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন দামি সরঞ্জামাদি ও অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করে। পরে ঘটনা যাতে জানাজানি না হয় সেজন্য ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ভিকটিম শিশু রাতুলকে ওই রাতেই তাদের নিজগৃহে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
এছাড়া হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ভিকটিমের মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব আউলিয়াপুর সাকিনের মো. জয়নাল বিশ্বাসের বাড়ির পেছনে পরিত্যক্ত ঘরের মেঝের ৫ ফুট গভীরে মাটিচাপা দেয়। এ সময় তারা মরদেহের গায়ে লবণ দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে মাটিচাপা দিয়ে রাখে।
পরে আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে চোরাই মালামাল ০২নং আসামি মো. হানিফ হাওলাদারের রান্নাঘরের মাটির নিচ থেকে ও বসতঘরের পেছনের ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানায় গত ২১ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৩০ তৎসহ ৩২৮/৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোডে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের আদালতে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
আব্দুস সালাম আরিফ/এফএ/এএসএম