পঞ্চমবার মনোনয়ন জমা

অন্তত একবার এমপি হতে চান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জাহাঙ্গীর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৮:৫১ এএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর, বিজয়নগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব মো. কাজী জাহাঙ্গীর নামের এক প্রার্থী।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দাখিলের শেষ সময়ের ঠিক ৫ মিনিট আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করলেন জাহাঙ্গীর। গত চারবার তিনি মনোনয়ন দাখিল করে একবারও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। প্রতিবারই যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। তবে এবার তার প্রত্যাশা ভোটে অংশ নিতে পারবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের কাজীপাড়া এলাকার কাজী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া ও আমেনা বেগম দম্পতির নয় সন্তানের মধ্যে জাহাঙ্গীর সবার বড়। ধান কেনাবেচা আর গাভী পালন করেই জীবনের চাকা ঘুরে তার। ধান আর দুধ বিক্রি করে প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় করেন।

জাহাঙ্গীর বলেন, আমি বিয়ে করিনি। বাবা-মা আর আমি এক সঙ্গে থাকি। আমার উপার্জনেই তাদের জীবন চলে। বাবা-মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। আমি রান্নাবান্না শেষ করে বাবা-মাকে খাইয়ে দিয়ে তারপর মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছি। আমার মতো অন্য প্রার্থীদের মতো অঢেল টাকা-পয়সা খরচ করার সক্ষমতা নেই। তাই মানুষজন সঙ্গে রাখতে পারি না। এজন্য কাউকে সঙ্গে না এনে একাই মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছি। যদি এবার মনোনয়নপত্র বৈধ হয়- তাহলে মানুষের আর্থিক সহযোগিতা করবো নির্বাচনের জন্য।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আমার কাছে একটা নেশা। যেহেতু পরিবারের সদস্যরা আমার উপার্জনেই চলে। তাই আমাকে নির্বাচন না করার ব্যাপারে কিছু বলতে পারে না। আমি শুধু সংসদ নির্বাচনেই অংশ নেই। আগে চারবার সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। প্রতিবারই কাগজপত্রে ত্রুটি দেখিয়ে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেওয়া হয়। আমার তো অনেক টাকা ফি দিয়ে মনোনয়নপত্র পূরণ করানোর সামর্থ্য নেই। তাই নিজেই নিজের মনোনয়ন ফরম পূরণ করি। এজন্য ত্রুটি থেকে যায়।

‘নির্বাচন করতে গিয়ে অনেক টাকা-পয়সা নষ্ট করেছি। এখন শুধু বাড়িটুকু আছে। বাকি জায়গা-জমি যা ছিল- সবই বিক্রি করেছি। কিন্তু প্রতিবারই নানা ত্রুটি দেখিয়ে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। যার ফলে আর ভোটে অংশ নিতে পারি না। তবে মানুষজন আমাকে ভালোবেসে ‘এমপি সাহেব’ বলে ডাকে।’ যোগ করেন জাহাঙ্গীর।

বর্তমান রাজনীতি চর্চা ভালো লাগে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন প্রতিহিংসার রাজনীতি চলে। এগুলো আমি পছন্দ করি না। এজন্য আমি কোনো দলে যোগ দেই না। আমি অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে চাই। যার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করি। তিনি আরও বলেন, আমি অন্তত একবার এমপি হতে চাই। বিজয়ী হয়ে কৃষিতে পরিবর্তন আনতে চাই। কারণ কৃষকরাই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন। এছাড়া তরুণ সমাজের অধিকাংশই নেশায় আসক্ত। তাদের কোনো কর্মসংস্থান নেই। আমি তাদের জন্য কর্মসংস্থান করে নেশামুক্ত সমাজ গঠন করতে চাই।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।