গতবছরের লোকসান ৬১ কোটি

দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

অডিও শুনুন

দেশের সর্ববৃহৎ চিনিকল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি ৬১ কোটি ৫ লাখ টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০২৩-২৪ আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করেছে।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে দর্শনা কেরু চিনিকলের ডোঙায় আখ ফেলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়। প্রধান ও বিশেষ অতিথিরা একযোগে ডোঙায় আখ নিক্ষেপের মধ্যদিয়ে মাড়াই মৌসুমের সূচনা করেন।

চিনিকলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ৫২ কার্যদিবসে ৬ দশমিক ২০ শতাংশ চিনি আহরণের হার ধরে ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে চার হাজার ৩০ মেট্রিন টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সারের সভাপতিত্বে কেন ক্যারিয়ার চত্বরে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) শেখ শোয়েবুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আতাউর রহমান খান পরিচালক (উৎপাদন ও প্রকৌশল), জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা, পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়্যারম্যান মাহফুজুর রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা মিতা প্রমুখ।

১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈবসার কারখানা ও ওষুধ কারাখানার সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সে চিনি কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান গুনে আসছিল। তবে সরকারিভাবে চিনির মূল্যবৃদ্ধির কারণে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে কারখানাটি। এছাড়া প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মিলস হাউজে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করে চিনিকলটি আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এতে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়বে।

চিনিকলের শ্রমিকরা জানান, চলতি বছর মিলস হাউজের ফিটিংয়ের কাজ ভালো হয়েছে। মিল ভালোই চলবে। ফলে বেশি চিনি উৎপাদন সম্ভব হবে।

গতবছর (২০২২-২৩ মাড়াই মৌসুম) ৪২ মাড়াই দিবসে প্রায় ২৩ হাজার টন চিনি উৎপাদন করেছিল চিনিকলটি। সেসময় আখের অভাবে নির্ধারিত দিনের আগেই বন্ধ হয়ে যায় চিনিকল। এবছর কেরু চিনিকল জোনে তিন হাজার ৮০২ একর জমিতে মজুত রাখা হয়েছে আখ। এবার প্রতিমণ আখের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২২০ টাকা। তবে চিনির মূল্য বাড়লেও আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি।

বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সহসভাপতি ওমর আলী বলেন, চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাছে আখচাষিদের এবার দাবি, চাষিদের আখ বিক্রির পুঁজির পরিমাণ বাড়াতে হবে, আখের মূল্য সরাসরি নগদে পরিশোধ করতে হবে, ক্যাশ বা বিকাশে চাষিরা টাকা নেবেন না; ঋণের সার, বীজ, কীটনাশক সঠিক সময়ে দিতে হবে এবং চাষিদের কোটায় পাওনা চিনি উত্তোলনের সময় বাড়াতে হবে।

চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হেসেন বলেন, এবার চিনিকলে লোকসান কমিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।

গতবছর ৬১ কোটি ৫ লাখ টাকা লোকসান দেখিয়েছে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকল।

হুসাইন মালিক/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।