বরিশাল

দেড় মাস আগেই বেড়েছে রমজান কেন্দ্রিক পণ্যের দাম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরিশাল
প্রকাশিত: ১১:৪৮ এএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪
ফাইল ছবি

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হবে রমজান মাস। তবে দেড় মাস আগেই রমজান-নির্ভর পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে হঠাৎ করে। এতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানে চাহিদার শীর্ষে থাকা ছোলা, খেজুর, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেলের দাম কয়দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৮ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বরিশাল নগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারসহ বিভিন্ন দোকান ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে মানভেদে খেজুরের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। এক কেজি জিহাদি খেজুর খুচরা আগে ২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ২৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাবাজ খেজুর কেচি ৪৭০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আলজেরিয়া খেজুর ৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫০ টাকায়। এছাড়া ৩৫০ টাকার খুরমা খেজুর ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একই সময়ে খুচরা বাজারে ছোলার দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা। আগে খুচরা বাজারে ছোলা ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ১০০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পাইকারি বাজারে এক কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৭৮ ও ৯০ টাকা।

খুচরা বাজারে মসুর ডাল কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। ১০০ টাকার এক কেজি মসুর ডাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। পাইকারি বাজারে এক কেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১০২-১০৩ টাকায়।

খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারে বেড়েছে ৮ টাকা। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল আগে খুচরা বাজারে ১৬৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন ১৭৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আখের গুড় কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। এক কেজি আখের গুড় ১৫ দিন আগে বিক্রি হতো ১৩০ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। খুচরা বাজারে মুড়ির দাম ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১২০ টাকা। যা আগে খুচরা বাজারে বিক্রি হতো ১০০ টাকায়।

খুচরা বাজারে চিড়ার দাম ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৪ টাকায়। বেসন কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। খুচরা বাজারে যা ৯০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০ টাকার এক কেজি পেঁয়াজ বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকায়। পাইকারি বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬৫-৮০ টাকা।

তবে খুচরা বাজারে একই সময়ে কেজিপ্রতি চিনির দাম কমেছে ৫ টাকা। আগে ছিল ১৪৫ টাকা কেজি, যা বর্তমানে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৪ টাকা ৮০ পয়সায়।

ভোক্তা রিয়াজুল কবির জানান, রমজান মাসকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা খুচরা বাজারে এমন দাম বৃদ্ধি করেছে। অবিলম্বে দাম বৃদ্ধির সঠিক কারণ অনুসন্ধান করে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

বরিশাল নগরীর বাংলা বাজারের আল-আমিন ট্রেডার্সের খুচরা ব্যবসায়ী মো. আল-আমিন সিকদার জানান, পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। তাছাড়া পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে পরিবহন ব্যয়, নষ্ট পণ্য ও বাতিল হওয়াসহ অন্যান্য ব্যয়ও রয়েছে। তাই খুচরা বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

নগরীর ফলপট্টি রোডের খুচরা ব্যবসায়ী বরিশাল খেজুর ঘরের ইমরান জানান, গত সপ্তাহ থেকে খেজুরের দাম প্রকার ভেদে ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। রমজান শুরুর আগে আবারও দাম বাড়তে পারে।

ফড়িয়াপট্টির কৃষি বাণিজ্যালয়ের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা সজল দত্ত জানান, ভারতের পেঁয়াজ কম আসায় দাম বেড়েছে। তাছাড়া আবহাওয়া খারাপ থাকায় দেশি পেঁয়াজও খেত থেকে তুলছে না কৃষকরা। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমবে।

এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুমি রাণী মিত্র জানান, ব্যবসায়ীদের ক্রয় রশিদ তদারকিসহ অন্যান্য বিষয়ে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। শিগগিরই এসব পণ্যের ওপর জোর দিয়ে আমাদের অভিযান শুরু হবে। আমরা বাজারদর নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছি।

শাওন খান/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।