মিরসরাই

সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ২০ টাকা

এম মাঈন উদ্দিন
এম মাঈন উদ্দিন এম মাঈন উদ্দিন , উপজেলা প্রতিনিধি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ১২:১৩ পিএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ২০ টাকা বেড়েছে ডিমের দাম। খুচরা প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা। কিন্তু এক সপ্তাহ আগেও খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩২ থেকে ১৩৬ টাকায়। এখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৬ টাকায়।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও গ্রামীণ দোকানগুলো দেখে এ চিত্র দেখা গেছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, লোকসানের ভয়ে অনেক ছোট ও মাঝারি খামারিরা লেয়ার মুরগি বিক্রি করে দিয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে সবজির দাম বাড়তি থাকায় ডিমের ওপর চাপ বেড়েছে। একদিকে চাহিদা বেড়েছে, আবার অপরদিকে রয়েছে সরবরাহ সংকট। তাই ডিমের বাজার বাড়তি রয়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ২০ টাকা

বারইয়ারহাট পৌর বাজারে ডিমের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারি ১০০ ডিম বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়। ডিমের বৃহৎ আড়ত টাঙ্গাইল থেকে সেই ডিম কিনতে হচ্ছে এক হাজার টাকায়।

অন্যদিকে বড়তাকিয়া খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৬ টাকায়। এছাড়া বিভিন্ন গ্রামীণ দোকানে প্রতিপিস ডিম বিক্রি করছে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা। এদিকে প্রতি পিস হাঁসের ডিমের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা এবং প্রতি হালি হাঁসের ডিমের দাম ৮০ থেকে ৮৮ টাকা। শীত মৌসুমে অনেকেই বেশি পরিমাণে হাঁসের ডিম কিনতে চায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ২০ টাকা

বড় দারোগাহাট বাজারে ক্রেতা নুর উদ্দিন জানান, খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকায়। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে ক্রেতারা অসহায় হয়ে পড়েছে। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে, তারপরেও দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। দাম বাড়ার পর থেকে বাধ্য হয়ে এক জোড়ার বেশি ডিম কিনি না।

মিঠাছরা বাজারে আসা ক্রেতা মজিবুল হক জাগো নিউজকে বলেন, আগে এক ডজন ডিম একসঙ্গে কিনতাম। দাম বেড়ে যাওয়ায় এক হালির বেশি কেনা সম্ভব হয়না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম বেশি। আমাদের পরিবারগুলোর চলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।

উপজেলার কাটাছারা ইউনিয়নের চত্বর ভূঁইয়ারহাট বাজারের দোকানী সাহাব উদ্দিন বলেন, আমি পাইকারিভাবে প্রতি পিস ডিম কিনেছি ১১ টাকা ৫০ পয়সায়। পরিবহন খরচ রয়েছে, অনেক ডিম নষ্ট হয়ে যায়। প্রতি পিস ডিম ১৩ টাকায় বিক্রি না করলে লাভ হবে না।

করেরহাট একরাম পোল্ট্রির স্বত্তাধিকারী একরামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, আমার খামারে পাঁচ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় চার হাজার ডিম উৎপাদন হয়। প্রতি পিস ডিম পাইকারের কাছে বিক্রি করছি ১০ টাকায়। প্রতি পিস ডিমে উৎপাদন খরচ পড়ছে প্রায় ৯ টাকা ৮০ পয়সা। এর কমে বিক্রি করলে লোকসানে পড়তে হবে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ২০ টাকা

আরেক খামারি ইকবাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিপিস ডিম ১০ টাকায় বিক্রি না করলে আমাদের লোকসানে পড়তে হবে। গত কয়েক মাস ৯ টাকা ৫০ পয়সার উপরে ডিম বিক্রি করতে পারিনি। খামার থেকে ভোক্তার হাতে পৌছানো পর্যন্ত প্রতি পিস ডিমে তিন টাকা বেড়ে যায়। এতে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্তভোগী।

করেরহাট বাজার কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, লোকসানে পড়ে অনেক খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ এখন ডিম উৎপাদনের খরচ অনেক বেশি। বিশেষ করে মুরগির খাবারের দাম বাড়তি। অন্যদিকে ডিম আমদানি হয়নি, তাই বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহের সংকট দেখা দিয়েছে।

এম মাঈন উদ্দিন/এনআইবি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।