আশুলিয়ায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ভুল চিকিৎসায় মিজানুর রহমান (৩৬) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
মিজানুর রহমান আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় পরিবারসহ ভাড়া বাসায় থেকে হোটেল ব্যবসা করতেন। তিনি মাদারীপুরের কালকিনি এলাকার বাসিন্দা।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার জামগড়া ছয়তলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দি-ল্যাব এইড হাসপাতালে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।
মিজানের পরিবার জানায়, পিত্তথলিতে পাথর অপসারণে অস্ত্রোপচারের জন্য রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই রাত সোয়া ৮টার দিকে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাকিফ রহমান তার অস্ত্রোপচার করেন। এরপর থেকেই তার বমি হতে থাকে। সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় নার্স ডাকলে তিনি এসে ইনজেকশন দেন। এরপরও ব্যথা না কমায় তাকে আরও দু’টি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপরই মুখ ও নাক দিয়ে ফেনা বের হয়ে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। তখন নার্সরা এসে দ্রুত তাকে ছাড়পত্র দিয়ে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তখন নবীনগর কেন্দ্র হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান অনেক আগেই তিনি মারা গেছেন।
মিজানের ছোট ভাই রিপন হোসেন বলেন, ভাইয়ের ব্যথা বাড়লে প্রথম একজন এসে একটি ইনজেকশন দেন। এরপর আরেকজন এসে আরও দুটি ইনজেকশন দেন। কিন্তু তিনি ডাক্তার নার্স কিছুই না। ওই ইনজেকশন দেওয়ার পরে তার নাক-মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে যায়। পরে অন্যান্য নার্সরা অন্য মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন এবং ছাড়পত্র দেন। কিন্তু মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা বলেন অনেক আগেই তিনি মারা গেছেন।
এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাকিফ রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
দি-ল্যাব এইড হাসপাতালের পরিচালক লোকমান হোসেন বলেন, আমার এখানে সোমবারকে এক রোগী অপারেশন হয়েছে। আজকের সকালে রোগীটা খারাপ হইছে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তবে, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে, কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল এ হাসপাতালে জরায়ুর অপারেশন করান ৪৫ বছর বয়সী রহিমা আক্তার। কিন্তু চিকিৎসক তার মূত্রথলি কেটে অন্যত্র লাগিয়ে দেন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। সেখানে গিয়ে স্বজনরা ভুল চিকিৎসার বিষয়টি জানতে পারেন। ৩৫ দিন ভুগে মারা যান তিনি।
এমএএইচ/