দুই চিকিৎসক হত্যা

সাড়ে ৩ মাসেও আটক হননি কেউ, ন্যায়বিচার নিয়ে স্বজনদের শঙ্কা

সাখাওয়াত হোসেন
সাখাওয়াত হোসেন সাখাওয়াত হোসেন , জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ০১:১৪ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
নিহত চিকিৎসক কাজেম আলী (বামে) ও পল্লিচিকিৎসক এরশাদ আলী

রাজশাহী মহানগরীতে দুই চিকিৎসক হত্যার সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া সাদা রঙের গাড়িরও কোনো হদিস নেই। তাই এখনো রহস্যে ঘেরা এ দুই চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ড। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সন্তুষ্ট নয় বলছেন পরিবারের সদস্যরা। ন্যায়বিচার নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা।

নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তায় রাজশাহী মহানগরজুড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অন্তত পাঁচ শতাধিক সিসি ক্যামেরা রয়েছে। অথচ গত ৩০ অক্টোবর নগরীর কৃষ্টগঞ্জ বাজারে অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে নিজ চেম্বার থেকে পল্লিচিকিৎসক এরশাদ আলীকে উঠিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এর ঘণ্টাখানেক পর রাস্তায় মেলে তার মরদেহ। এ ঘটনার চার ঘণ্টার ব্যবধানে নগরীর বন্ধ গেট এলাকায় হত্যা করা হয় চিকিৎসক কাজেম আলীকে। এ ঘটনার প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কোনো ক্লু নেই। এখন পর্যন্ত কাউকে আটকও করতে পারেনি।

নিহত এরশাদ আলীর মা কুমকুম বিবি বলেন, ‘আমরা মনে করছি যারা মেরে গেছে তাদের ক্ষমতাশালীদের সঙ্গে আঁতাত রয়েছে। এখন মনে হচ্ছে আমরা ন্যায়বিচার পাবো না।’

ভাই রুহুল আমিন বলেন, ‘পুলিশের কোনো উদ্যোগ নেই এখানে। আমরা বুঝতে পারছি না আমরা ন্যায়বিচার পাবো কি না। আমরা আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি।’

তবে নিহত চিকিৎসক কাজেম আলীর স্ত্রী ডা. ফারহানা ইয়াসমিন সোমার সঙ্গে যোগাযোগ করল তিনি গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মো. নওশাদ আলী বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় গেছি, রাস্তায় নেমেছি, আন্দোলন করেছি, আলটিমেটামও দিয়েছি। সবাই আমাদের বলেছে, আন্দোলন দরকার নেই; আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে, আসামিরা দ্রুত ধরা পড়বে। কিন্তু দুঃখজনক এবং আতঙ্কের বিষয় এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ আটক হননি।’

চিকিৎসক এরশাদ আলীর মামলা নিয়ে কাজ করছে মহানগর পুলিশ। আর ডা. কাজেম আলীর মামলাটি দেখছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দুটি সংস্থাই বলছে, তারা এনিয়ে কাজ করছেন। যদিও এর অগ্রগতি নিয়ে মুখ খুলতে চান না তারা।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুজন স্বনামধন্য লোক এই ঘটনার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি যেন বিশদভাবে অনুসন্ধান হয়, সেজন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইয়ে দেওয়া হয়েছে। অপর মামলাটি মহানগর পুলিশ তদন্ত করছে। এটার কোনো ফলাফল প্রাপ্তির সাপেক্ষে আপনাদের দ্রুত জানিয়ে দেওয়া হবে।’

রাজশাহী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখন পর্যন্ত এককভাবে কিছু বলার মতো পর্যায়ে আসেনি।’

এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।