স্কুলে নেই শহীদ মিনার, খাতায় এঁকে ভাষাশহীদদের স্মরণ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৭:৪৮ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

অডিও শুনুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা শিবগঞ্জ। এ উপজেলায় রয়েছে ২৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে পড়ালেখা করে ৬০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। তবে বিদ্যালয়গুলোতে নেই শহীদ মিনার। ফলে ভাষাশহীদদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

শহীদ মিনার না থাকা সত্ত্বেও ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার কমতি নেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। খাতায় শহীদ মিনার এঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে তারা। অনেক বিদ্যালয়ে প্রতীকী শহীদ মিনার স্থাপন করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার মিঠিপুর-জগনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়, চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মর্দানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নেই শহীদ মিনার। তাই ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এজন্য শ্রেণিকক্ষে বসে সাদা কাগজে শহীদ মিনার এঁকে দিবসটিকে স্মরণ করছে।

মিঠিপুর-জগনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাসলিমা খাতুন জাগো নিউজকে বলে, ‘আমরা বইয়ে পড়েছি একুশে ফেব্রুয়ারি। এই দিনে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয়। কিন্তু আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নেই। তাই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারিনি। এজন্য খাতায় শহীদ মিনার এঁকে ভাষাশহীদদের স্মরণ করছি।’

পাশেই মর্দানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মিম বলে, ‘আমি সকালে ফুল হাতে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলাম। কিন্তু শহীদ মিনার না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।’

স্কুলে নেই শহীদ মিনার, খাতায় এঁকে ভাষাশহীদদের স্মরণ

চন্ডিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আশিক। সেও জানায়, তাদের স্কুলে শহীদ মিনার নেই। এজন্য ভাষাশহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারিনি তারা।

আশিক বলে, ‘স্যার আমাদের একটি প্রতীকী অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। তবে শহীদ মিনার থাকলে আমরা সবাই যথাযথভাবে শ্রদ্ধা জানাতে পারতাম।’

চন্ডিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আশপাশে কোথাও শহীদ মিনার নেই। স্কুলেও নেই। পাশের বাজারে শহীদ মিনার আছে কিন্তু একটি মহাসড়ক পার হতে হয়। এতে আমার স্কুলের ৪০০ কোমলমতি শিক্ষার্থী মহাসড়ক পারাপারে সমস্যা হয়। এজন্য আমাদের স্কুলেই একটি প্রতীকী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষাশহীদদের প্রতি কীভাবে শ্রদ্ধা জানাতে হয় তা শিশুদের দেখিয়েছি।’

শিবগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার সিংহ জানান, উপজেলায় মোট ২৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ২৫-৩০টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। বাকিগুলোতে নেই। এজন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।

সোহান মাহমুদ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।