ক্যাম্পস আয়োজিত মেডিকেল ক্যাম্প

বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা পেলো সাড়ে ৩ হাজার সুবিধাবঞ্চিত মানুষ

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৫ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

প্রায় সাড়ে তিন হাজার সুবিধাবঞ্চিত রোগীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধ সরবরাহ করেছে স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ২০ বছর ধরে ব্যতিক্রমধর্মী এমন আয়োজন করে আসছে ক্যাম্পস। এরই ধারাবাহিকতায় ২০তম বছরে এসে চলতি বছরেও টাঙ্গাইলের সখিপুর থানার হাতিবান্ধা গ্রামের তালিমঘর প্রাঙ্গণে ‘ফ্রি মেডিকেল ও চক্ষু ক্যাম্প’ এর মাধ্যমে অসহায় রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।

মেডিকেল ক্যাম্পের ১০ দিন আগে থেকে অর্থাৎ ১১ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের দরিদ্র গ্রামবাসীর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগীর নিবন্ধন ও প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের জন্য বিনামূল্যে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞসহ প্রায় অর্ধশতাধিক চিকিৎসক দিনব্যাপী রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রসহ বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রদান করেন। এছাড়াও ২৫০ এর বেশি চক্ষুরোগীর চোখের ছানি অপারেশন ও লেন্স প্রতিস্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়।

দেশের শীর্ষস্থানীয় কিডনি বিশেষজ্ঞ ও ক্যাম্পস-এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদের তত্ত্বাবধানে দিনব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি-সুস্থ জীবনধারা’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও ‘প্রয়াস-২০’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

আলোচনায় কিডনি বিষয়ের ওপর মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে অকাল মৃত্যুবরণ করবে। বর্তমানে ৮৫ কোটির বেশি লোক দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য এর মধ্যে ৭৫ কোটি রোগী জানে না যে মরণঘাতী কিডনি রোগ নীরবে তাদের কিডনি নষ্ট করে চলেছে।

সভায় প্রধান অতিথি গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেন, এরূপ মানবিক আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। সমাজের প্রত্যেকের ক্যাম্পসের মতো মানবিক কার্যক্রমে নিজেদের সাধ্যমতো অবদান রাখা উচিত।

তিনি আরও বলেন, সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ব্যায়াম, খেলাধুলার বিকল্প নেই। শিশুদের মোবাইলফোন, ভিডিও গেম থেকে চোখ সরাতে মাঠে নামতে হবে, তবেই হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, উচ্চরক্তচাপের মতো মরণব্যাধির হাত থেকে আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করা যাবে।

ক্যাম্পস-এর সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হারিসুল হক বলেন, ক্যাম্পস বিগত বছরগুলোতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক লাখেরও বেশি রোগীর বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা, সাড়ে তিন হাজার রোগীর চোখের ছানি অপারেশন, তিনশ ঠোঁটকাটা-তালুকাটা রোগীর অপারেশন করেছে এবং বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত সাতটি সেন্টারের মাধ্যমে ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

ক্যাম্পস-এর নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান সালেহীন এ মানবিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সকল নিবেদিতপ্রাণ, চিকিৎসকদের এবং টাঙ্গাইল জেলা রোভারের সদস্যদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক ও পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান এবং পরিপাকতন্ত্র ও লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহম্মেদ।

উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, ক্যাম্পস প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি নাসরিন বেগম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন এবং অর্থ মন্ত্রণালরের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ আমিন শরীফ (সুপন)।

ক্যাম্পস আয়োজিত এ মানবিক কার্যক্রমের জন্য অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদকে সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে সামাজিক সকল কাজে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

এমআইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।