পেঁয়াজ ক্ষেতে খাল খনন করে ইটভাটায় মাটি বিক্রি মেম্বারের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ১১:৩৩ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ফরিদপুরের সালথায় পেঁয়াজ ক্ষেতের ভেতর দিয়ে খাল খনন করে মাটি বিক্রির অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ইউপি সদস্যের (মেম্বার) বিরুদ্ধে। কয়েক বিঘা জমির পেঁয়াজের চারা নষ্ট করে ও একটি মেহগনির বাগানের ভেতর দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন কৃষক।

দেখা যায়, উপজেলার খারদিয়া ছয়আনি আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে বলতলা এলাকা পর্যন্ত পেঁয়াজ ক্ষেত ও একটি মেহগনির বাগানের ভেতর দিয়ে ভেকু মেশিন (খননযন্ত্র) দিয়ে খাল খনন করা হয়েছে। ভেকুর তাণ্ডবে নষ্ট হয়েছে কয়েক বিঘা জমির পেঁয়াজের চারা। উপড়ে ফেলা হয়েছে একটি বাগানের কয়েকটি মেহগনির গাছ। পাশেই কৃষিজমিতে খনন করা হয়েছে আরেকটি পুকুর।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, পেঁয়াজ ক্ষেত ও বাগানের ভেতর দিয়ে খাল কাটার নামে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেছেন যদুনন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেন। খনন করা মাটি খালের দুই পাড়ে না ফেলে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই খাল কৃষকের কোনো উপকারে আসবে না। উল্টো বৃষ্টি নামলে খালের দুই পাশে থাকা কৃষিজমির মাটি ভেঙে খাল ভরাট হয়ে যাবে।

কৃষকরা আরও জানান, খাল খননের মাটি ট্রলি গাড়িতে করে নেওয়া-আনা করায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্থানীয় পাকা সড়ক নষ্ট হয়েছে। ফসলসহ পাকা সড়কের ক্ষতি হলেও স্থানীয়ভাবে ওই ইউপি সদস্য প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে কেউ মুখ খুলেনি।

এ বিষয় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেন বলেন, জনস্বার্থে খালটি কাটা হয়েছে।

তবে সরকারি কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে খাল কেটে মাটি বিক্রি করছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন মিয়া বলেন, ওখানে একটি সরকারি খাল ছিল। খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা সেখানে পেঁয়াজ চাষ করে আসছেন। তবে খালটি সরকারি কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে কাটা হয়নি। ইউপি সদস্য ফরিদ মাটি বিক্রি করার জন্য ব্যক্তিগত স্বার্থে খালটি কেটেছেন বলে জানতে পেরেছি। যে কারণে খালের পাড় বাঁধা হয়নি। ফলে খালটি জনগণের ১০ পয়সার উপকারে আসবে না।

এ ব্যাপারে যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এই খাল কাটার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে খাল কাটা হচ্ছে না। তবে শুনেছি খাল কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, সরকারিভাবে খালটি কাটা হয়নি। আমার অনুমতিও নেয়নি কেউ। আমি এ বিষয় কিছু জানিও না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।


এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।