ব্যথার ইনজেকশনের পর শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন না পেয়ে মারা গেলো রোগী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৪:০৫ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এক রোগীকে ব্যথার ইনজেকশন পুশ করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর অক্সিজেনের প্রয়োজন হলেও তাকে তা দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে তিনি অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে মারা যান।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম শ্যামল দাস (৫০)। তিনি মাদারীপুর শহরের পুরানবাজারের পান বিক্রেতা ও মাদারীপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আমিরাবাদ এলাকার রামজীবন দাসের ছেলে। স্বজনদের দাবি, নার্সের অবহেলায় অক্সিজেন না পেয়ে শ্যামল দাস মারা যান।

পারিবারিক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে মেরুদণ্ডের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন শ্যামল দাস। হাসপাতালের নিচতলার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ চিকিৎসাপত্র দিয়ে ভবনের ছয়তলায় ভর্তি নেন। ভর্তি হলে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখে রোগীকে ব্যথার ইনজেনশন পুশ করেন কর্তব্যরত নার্স সুজাতা। এরপরই শুরু হয় রোগীর শ্বাসকষ্ট ও ছটফটানি। এসময় নার্সকে অক্সিজেনের কথা বললেও তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন। এরপর রাত ৮টার দিকে মারা যান শ্যামল দাস।

নিহত শ্যামল দাসের ফুপাতো ভাই গজেন দাস বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ১১ বছরের এক ছেলে ও ১৪ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। এই সংসারটা এখন কীভাবে চলবে? এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নার্সের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

শ্যামল দাসের ছোট ভাই শংকর দাস বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আমার ভাইকে ঠিকঠাক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তাই অল্প সময়ের মধ্যে আমার ভাই মারা গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে মাদারীপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজিব মাহমুদ কাওসার বলেন, শুধু অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। সরকারি হাসপাতালে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যে নার্স দায়িত্বে অবহেলা করেছেন তার বিচার ও হাসপাতাল থেকে অপসারণের দাবি জানাই।

রাত ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করে বাসায় চলে যান অভিযুক্ত নার্স সুজাতা। যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া হয়নি।

হাসপাতালের চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয় শ্যামল দাসকে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ভবনের ছয়তলায় কী হয়েছে, সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ও জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুনীর আহম্মদ খান বলেন, সবকিছু পর্যালোচনা করে নার্সের দোষ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।