এসএসসি

দুই পরীক্ষার্থীকে অতিরিক্ত সময় দেওয়ায় চার শিক্ষককে অব্যাহতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৭:২৫ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ফাইল ছবি

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে দুই পরীক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়ার অভিযোগে ওই কেন্দ্রের সচিব ও হল সুপারসহ চারজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

অব্যাহতি দেওয়া শিক্ষকদের স্থলে অন্য চারজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কারণ দর্শানোর নোটিশসহ বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন কেন্দুয়া সায়মা শাহজাহান একাডেমির কেন্দ্র সচিব ও মজলিশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন দেবনাথ, হল সুপার ও আবদুর রহমান স্মৃতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া, পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সায়মা শাহজাহান একাডেমির সহকারী শিক্ষক সুব্রত লাল ভট্টাচার্য ও মজলিশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাসির উদ্দিন। তাদের পরিবর্তে গন্ডা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলোয়ার হোসেনকে কেন্দ্র সচিব, গগডা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে হল সুপার এবং নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলমগীর ও গন্ডা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নয়ন চন্দ্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এসএসসির গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় সায়মা জাহান একাডেমির কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধির ছেলে এবং ভাতিজি অংশ নেয়। কিন্তু কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ওই দুই শিক্ষার্থীকে নকলের সুযোগসহ অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এসময় অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ঘটনার প্রতিবাদ করেন।

পরে সায়মা জাহান একাডেমির প্রধান শিক্ষক শহীদ মিয়া ওই দুই শিক্ষার্থীর পরীক্ষার খাতা সংগ্রহ করে নেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন। পরে ইউএনও ঘটনার সত্যতা পেয়ে মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্র সচিবসহ চারজনকে বরখাস্ত করাসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। একই সঙ্গে ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে, ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ইসলাম ধর্ম পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শামছুল ইসলাম পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন।

কেন্দুয়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব হোসেন বলেন, কেন্দ্র সচিবসহ চারজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। শিক্ষাবোর্ডের কন্ট্রোলারের সঙ্গে কথা বলে ওই কেন্দ্রের সিটগুলোও পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কেন্দুয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্ত কমিটির প্রধান মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল আলম বলেন, তদন্ত কাজ চলছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তিনি আও জানান, সায়মা শাহজাহান একাডেমি কেন্দ্রে কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও আলহাজ আতিকুর রহমান ভূইয়া একাডেমির ৫২০ জন নিয়মিত পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

এইচ এম কামাল/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।