আবারও স্কুলে যেতে চায় বিরল ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত আরাবী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০১:০৬ পিএম, ০১ মার্চ ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় বিরল এক ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ১০ বছরের শিশু তাহমিদ খন্দকার আরাবী। সে দূরারোগ্য ‘ইমিউন ডিজরেগুলেশন উইথ সিসটেমিক হাইপার ইনফ্লামেশন সিনড্রোম’ ক্যানসারে আক্রান্ত। এই ক্যানসারের একমাত্র চিকিৎসা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন। ছোট্ট শিশুর এমন কঠিন অবস্থায় দিশেহারা গোটা পরিবার। অনিশ্চয়তা ভর করেছে সবার ওপর। যন্ত্রণায় বিছানাগত শিশু আরাবী আবার সুস্থ হতে চায়, ফিরতে চায় বিদ্যালয়ে।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌর শহরের মোবারকপাড়ার মধ্যবিত্ত পরিবারে পেয়ারী খানম ও মনির খন্দকার দম্পতির ছোট মেয়ে শিশু আরাবী। বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর মা স্কুলশিক্ষিকা।

আরাবীর বাবা-মা বলেন, বছর দুই আগেও মেয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকার প্রতি মনোযোগী ছিল। পুরোপুরি সুস্থ সবল ও দূরন্ত আরাবীর জীবনে কাল হয়ে আসে এক সময়ের জ্বর। দীর্ঘদিনের জ্বরে দুর্বল হয়ে পড়ে আরাবীর শরীর। দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েও মেলেনি কোনো ফল। সহায় সম্বল হারিয়েও রোগ শনাক্তে ব্যর্থ হয় মধ্যবিত্ত এই পরিবারটি।

পরে ছয় দফায় ভারতের রুবি জেনারেল হসপিটালের চিকিৎসক ডা. তুষ্টি গাঙ্গুলী পরীক্ষা নীরিক্ষার পর বিরল এই রোগ শনাক্ত করেন শিশু আরাবীর শরীরে, যার একমাত্র চিকিৎসা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশান।

শিশু আরাবীর রোগ শনাক্তের পেছনেই ব্যয় হয়েছে অন্তত ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। এখন তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৪০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া আসা, চিকিৎসা খরচসহ দীর্ঘ সময় সেখানে অবস্থান করতে আরও ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ হবে। সবমিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকার প্রয়োজন আরাবীর। যা বহন করা এই ছোট্ট পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়।

আরাবীর স্কুলের প্রধানশিক্ষক বিকাশ কুমার দত্ত বলেন, আরাবী অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। ছোট্ট শিশুর এই বিরল রোগের কথা শুনে আমি খুব মর্মাহত হয়েছি। আরাবী লেখাপড়ার পাশাপাশি আঁকতে খুব পছন্দ করে। লেখাপড়ায় সে ১ থেকে ২ এর মধ্যে থাকে। শিক্ষক হিসেবে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আমার আহ্বান শিশু আরাবীকে বাঁচাতে আপনারা সহযোগিতা করুন। আমি তার জন্য দোয়া করি দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারো ফিরে আসুক স্কুলে।

আরাবীর মা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার মেয়ে হাসিখুশিতে ভরা, দূরন্ত চঞ্চল মেধাবী শিশু আবারও ফিরতে চায় স্কুলে। নিয়মিত হতে চায় পড়ালেখায়। নতুন করে বাঁচতে চায়।

মেয়েকে বাঁচাতে দেশ-বিদেশের সকল মানুষের কাছে সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সামান্য কিছু টাকায় আমার ছোট্ট মেয়েটা ফিরে পাবে নতুন জীবন।

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যানসার সার্জারি বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. মো. একরামুল হক জোয়ার্দ্দার জানান, ইমিউন ডিজরেগুলেশন উইথ সিসটেমিক হাইপার ইনফ্লামেশন সিনড্রোম ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তির হাতে কোনো কিছুর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এর একমাত্র চিকিৎসা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশান।

হুসাইন মালিক/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।