হাত খরচ-টিউশনির টাকায় ৩ রোবট বানালো বরিশালের সুজন
অডিও শুনুন
পরিবার থেকে দেওয়া হাত খরচের টাকা ও নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে জমানো টাকায় এক এক করে তিনটি রোবট তৈরি করে তাক লাগিয়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার খুদেবিজ্ঞানী সুজন পাল। তার তৈরি করা একেকটি রোবট আলাদা আলাদা কাজ করে। রোবট তিনটির নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গ ভার্সন-ওয়ান, বঙ্গ ভার্সন-টু এবং বঙ্গ ভার্সন-থ্রি।
সুজন পাল বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা গ্রামের জয়দেব চন্দ্র পালের ছেলে।
গৈলা গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শৈশব থেকেই সুজনের ইচ্ছা ছিল নতুন কিছু উদ্ভাবন করার। পরে ইউটিউব দেখে এবং পড়াশোনার পাশাপাশি রোবট তৈরি করে ফেলে সে। প্রথমে রোবট বঙ্গ ভার্সন-ওয়ান তৈরি করে সুজন। এ রোবট আগুন লাগলে সংকেত দেওয়া, বাংলা ও ইংরেজিতে কথা বলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী।
পরে করোনা মহামারি চলাকালীন রোবট বঙ্গ ভার্সন-টু বানিয়ে ফেলে সুজন পাল। এ রোবটটি করোনায় সেবক হিসেবে কাজ করাসহ বিভিন্ন কাজ করতে পারতো। বর্তমানে সুজন পাল তৈরি করছে রোবট বঙ্গ ভার্সন-থ্রি। প্রোগ্রামিং সহায়তাসহ প্রাথমিক শিক্ষক, চিকিৎসক, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন অফিসে তথ্য দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী এ রোবট।
পারিবারিক সূত্র জানায়, আর্থিক টানাপোড়েন থাকা সত্ত্বেও পরিবার থেকে দেওয়া হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে এবং নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা উপার্জন করে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে তিনটি রোবট বানিয়েছে সুজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর সময়ে তৈরি করায় প্রথম রোবটটি বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে মিল রেখে নামকরণ করা হয় ‘বঙ্গ’। পরবর্তী সময়ে একই নামে নতুন নতুন ভার্সন যোগ করে বানিয়ে ফেলে আরও দুটি রোবট।
সুজন পাল জাগো নিউজকে বলে, আমার রোবটগুলো একেকটি একেক কাজে পারদর্শী। আমি ভবিষ্যতে আরও নতুন কিছু বানাতে চাই। রোবট বিষয়ে পড়াশোনা করতে চাই। এজন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করি।
সুজনের বাবা জয়দেব চন্দ্র পাল বলেন, তার ছেলে এ পর্যন্ত তিনটি রোবট তৈরি করেছে। একেকটি রোবট তৈরিতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখন সে যদি সরকারি কোনো সহায়তা পেতো তাহলে আরও নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারতো।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, সুজন পালের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তাকে সহায়তা করার ব্যবস্থা করা হবে। যদি তার এ উদ্ভাবন কাজে আসে সেটা নিঃসন্দেহে অভাবনীয় সাফল্য হবে।
শাওন খান/এসআর/এমএস