জীবিতকে ‘মৃত’ দেখানোয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারের বিরুদ্ধে মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৭:০৫ পিএম, ২৯ মার্চ ২০২৪

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার অভিযোগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শাওন ও নারী সদস্য (মেম্বার) আসমা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ মার্চ) একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আয়না বেগম বাদী হয়ে কাশিয়ানী আমলি আদালত গোপালগঞ্জে মামলাটি করেন। তিনি ওই গ্রামের আব্দুল রউফ মোল্যার স্ত্রী।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আশিক জামান উপল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বাদী আয়না বেগম ২০১৭ সাল থেকে বয়স্ক ভাতা পেয়ে আসছেন। কিন্তু ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি মারা গেছেন উল্লেখ করে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম একটি প্রত্যয়নপত্র দেন। প্রত্যয়নপত্রে শনাক্তকারী হিসেবে সই করেছেন ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য আসমা বেগম। অথচ আয়না বেগম এখনো জীবিত আছেন। এতে আয়না বেগমের নামের বয়স্ক ভাতার কার্ডটি বাতিল হয়ে যায়।

দীর্ঘদিন আয়না বেগমের ভাতার টাকা ফোনে না আসায় তিনি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় গিয়ে খোঁজ নেন। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তিনি ‘মৃত্যুবরণ’ করেছেন। পরে বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের কাছে গেলে সমাধান দেয়নি। উল্টো তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ও হুমকি-ধমকি দেন বলে অভিযোগ বাদী আয়না বেগমের। পরে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।

ভুক্তভোগী আয়না বেগম বলেন, ‘আমি জীবিত থাকার পরও চেয়ারম্যান ও নারী ইউপি সদস্য আমাকে মৃত দেখিয়ে আমার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করে দিয়েছে। আমি শয্যাশায়ী স্বামীকে নিয়ে অন্যের জায়গায় থাকি। এ ভাতার টাকা দিয়ে ওষুধ কিনে খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।’

ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শাওন প্রত্যয়ন দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘যখন লাইফ ভেরিভিকেশন হয়েছে, তখন ওই বৃদ্ধাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা শনাক্ত করলে তিনি ‘মৃত্যুবরণ’ করেছেন বলে মর্মে আমি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি। তবে বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে শনাক্তকারী নারী সদস্য আসমা বেগম বলেন, ‘আমাদের ভুল হয়েছে। তার ভাতা আমরা ঠিক করে দেবো।’

কাশিয়ানী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ বজলুল রশিদ বলেন, চেয়ারম্যানের সই করা প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে কার্ডটি বাতিল করা হয়েছে। এখানে আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।