ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটসহ আটক ৩

ভোক্তা অধিকারের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচয়ে জরিমানা করতেন তারা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৮:৪০ পিএম, ০২ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চগড়ে ভোক্তা অধিকারের নামে ভুয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে একের পর এক ব্যবসায়ীকে জরিমানা করছিল প্রতারকচক্র। জরিমানা আদায়ের রসিদও ধরিয়ে দিচ্ছিলেন তারা। খবর পেয়ে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে জেলা শহরের লিচুতলা এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন বাংলাদেশ কনজ্যুমার রাইটস সোসাইটি নামের একটি সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি মফিজুল ইসলাম (৫২), সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম (৪৭) এবং সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম বাবু (৪৫)। এদের মধ্যে মফিজুলের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার আমতলা কাজীপাড়া, আমিনুলের জেলা সদরের ঝাকুয়াকালি এবং সাদেকুল ইসলামের বাড়ি জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকায়। তিনজনের মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকা পালন করতেন আমিনুল ইসলাম। এসময় সংগঠনের আরও দুজন পালিয়ে যান।

পুলিশ ও ব্যবসায়ীরা জানান, সংগঠনটির সভাপতি ও সম্পাদকসহ কমিটির ১০ সদস্য বিভিন্ন স্থানে ভোক্তা অধিকারের পরিচয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতেন। তারা দোকানে দোকানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। সোমবার (১ এপ্রিল) তাদের জরিমানার একটি রসিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে টনকন নড়ে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের। মঙ্গলবার দুপুরে একই কায়দায় মাইক্রোবাস নিয়ে তারা অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পঞ্চগড়ের সহকারি পরিচালক শেখ সাদী। পরে তাদের পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

ভোক্তা অধিকারের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচয়ে জরিমানা করতেন তারা

বাংলাদেশ কনজ্যুমার রাইটস সোসাইটির চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার সই করা পঞ্চগড় জেলা কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহ-সভাপতি লুপনা আক্তার, যুগ্ম-সম্পাদক সাদিয়া পায়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক সোলেমান আলী, কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম, আইনবিষয়ক সম্পাদক শফিউল আলম প্রধান, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মাজিদা আক্তার ও জেসমিন আক্তার। ১০ সদস্যের এ ভুয়া ভ্রাম্যমাণ আদালত টিম সোমবার পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকার ১০টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অংকের জরিমানা করে টাকা আদায় করে।

স্থানীয় দোকানদার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘তারা চারজন একটি মাইক্রোবাসে আমাদের বাজারে আসে। এসময় নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচয় দিয়ে আমাদের দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার ক্ষমতার কথা বলেন। প্রথমে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করতে চায়। পরে দুই হাজার টাকা জরিমানা করে টাকা দিয়ে দ্রুত চলে যায়।’

পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ সাদী বলেন, চক্রটি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করে করছিল। শুধু পঞ্চগড় নয়, অন্য জেলাতেও এমনটি করেছেন তারা। তাদের সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কোনো সম্পর্ক নেই। কখনোই ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হয় না।

সদর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় থানার মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সফিকুল আলম/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।