সিলেটে ঐতিহ্যের চড়ক উৎসবে মানুষের ঢল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিলেট
প্রকাশিত: ১২:০০ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানে দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে চা বাগানের মাঠে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী দর্শনার্থীরাও ভিড় জমান পূজাস্থলে।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে উৎসবে পরিণত হয় লাক্কাতুড়া এলাকা। বাংলা পঞ্জিকা মতে, প্রতি বছরের চৈত্র সংক্রান্তিতে এ অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। চড়ক পূজা উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকে মেলা বসে লাক্কাতুড়া সেভরন কোম্পানির পাশের মাঠে। চার পাশে চা বাগানের টিলা। মধ্যখানে একখণ্ড সমতল ভূমি। সেখানে চড়ক গাছের চড়কি বসানো হয়।

jagonews24

শনিবার বিকেলে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। চৈত্রের শেষ বিকেলে দুইজন সন্ন্যাসীর পিঠে বিশাল আকৃতির লোহার বড়শি গেঁথে চড়ক ঘোরানো হয়। এ সময়ে দর্শনার্থীদের অনেকে বাতাসা আর কলা ওপরের দিকে উড়িয়ে দেন আর দর্শনার্থীরা তা কুড়িয়ে নেন। চড়ক ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীরা জয়ধ্বনি এবং নারীদের কণ্ঠে হলুদ ধ্বনি উচ্চারিত হয়।

এরপর জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে ‘কালীনাচ’ এবং তান্ত্রিক মন্ত্র দিয়ে সাতটি বলিছেদ (লম্বা দা) এর ওপর শিব শয্যা করেন সন্ন্যাসীরা। শিবের ওপর উঠে কালী ভয়ানক এক অদ্ভুত রূপ ধারণ করেন। এ সময় উপস্থিত দর্শনার্থী সবাই আতঙ্কিত হয়ে উঠেন। বড়শি গাঁথা আগে সন্ন্যাসীদের জিহ্বা ও গলায় গেঁথে লোহার শিকল গেঁথে দেওয়া হয়।

ঐতিহ্যের চড়ক পূজা দেখতে শনিবার দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান লাক্কাতুরা সেভরন কোম্পানির পাশের মাঠে। বিকেল গড়ানোর আগে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় এ মাঠ। এ সময় মাঠের চারপাশের টিলায়ও অবস্থান করেন দর্শনার্থীরা। সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ সমাগম ঘটে এ পূজা দেখতে।

এদিকে, চড়ক পূজা উপলক্ষে মাঠের চারপাশ ও রাস্তায় মেলা বসে। মেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের বিভিন্ন রকমারি জিনিসপত্রের পসরা সাঁজিয়ে বসেন দোকানিরা। এতে ক্রেতাদেরও উপচেপড়া ভিড় ছিল।

আহমেদ জামিল/এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।