করোনাভাইরাস : চীনের সর্বনাশ ভারতের পৌষ মাস
করোনাভাইরাস মহামারির আকার ধারণ করায় জ্বালানি তেলের চাহিদা কমেছে চীনে। ফলে তেল আমদানি কমিয়েছে বেইজিং। যার প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে হুড়মুড়িয়ে কমছে তেলের দাম। চলতি সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরিশোধিত তেলের বাজার ব্রেন্টে তেলের দাম ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গত শুক্রবার প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ৬০.৬৯ ডলার।
করোনাভাইরাসে চীনের সর্বনাশ হলেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী ভারতে। দেশটিতে গত দুই সপ্তাহে পেট্রল ও ডিজেলের দাম উল্লেখ হারে কমছে। গতকাল রোববারও দাম কমেছে। এদিন রাজধানী দিল্লিতে পেট্রলের দাম প্রতি লিটারে ৩০ পয়সা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৩.৮৬ রুপিতে। দুই মাসের মধ্যে এটিই সবনিম্ন দাম। এদিকে ৩৫ পয়সা কমে দিল্লিতে ডিজেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৬৬.৯৬ রুপিতে।
দিল্লি ছাড়াও অপর গুরুত্বপূর্ণ তিন শহর কলকাতা, মুম্বাই ও চেন্নাইতেও পেট্রল-ডিজেলের দাম বেশ কিছুটা কমেছে। কলকাতায় প্রতি লিটার পেট্রল এবং ডিজেল বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৭৬.৪৮ এবং ৬৯.৩২ রুপি দরে। মুম্বাইতে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ৭৯.৪৭ রুপি, ডিজেল ৭০.১৯ রুপি। চেন্নাইতে প্রতি লিটার পেট্রল এবং ডিজেলের দর যথাক্রমে ৭৬.৭১ এবং ৭০.৭৩ রুপি।
প্রয়োজনীয় তেলের প্রায় ৮০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করে ভারত। যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেল এবং ডলারের বিনিময় মূল্যের সঙ্গে ভারতের খুচরা তেলের দাম পরিবর্তিত হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের কমায় ভারতের বাজারে তার সুফল মিলছে।
চীনের প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত তিন হাজার মানুষ। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তারপর থেকেই চীনের বিভিন্ন শহরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। একটি সামুদ্রিক বাজার থেকেই ওই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে চীন বাদেও থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্রে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
উহান থেকে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে গণপরিবহন, বিমানচলাচল ও রেলসেবা বাতিল করা হয়েছে। চীনের অন্যান্য শহরে ভ্রমণেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হুবেই প্রদেশে নিহতের সংখ্যা ৫৬ থেকে ৭৬ তে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য শহরে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছে ৮০ জন। এছাড়া আরও তিন হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিএ/পিআর