করোনার প্রভাবে রুপির ব্যাপক দরপতন
বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ ধারণ করা নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যে। এর ফলে প্রতিবেশী দেশ ভারতের মুদ্রা রুপির দাম রেকর্ড পরিমাণ কমেছে। এক মার্কিন ডলার সমান ৭৩ দশমিক ৯৪ রুপিতে নেমে এসেছে। ডলারের বিপরীতে রুপির এ মান গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীনের পর করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এটি প্রতিরোধে চীনের বহু শহরের পাশাপাশি ইতালির মতো দেশ ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বৈশ্বিকভাবে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করছে। ফলে সংক্রমণের হার নয় বরং ‘বিচ্ছিন্ন’ ও ‘অবরুদ্ধ’ নীতিই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
ইন্টারনেট মানি এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৩ মার্চ) এক মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার মূল্য এসে দাঁড়ায় ৭৩ দশমিক ৯৪ রুপি, যা ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন।
এদিকে ডলারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রুপির বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা শক্তিশালী হচ্ছে। ১৩ মার্চের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি রুপিতে মান দাঁড়ায় ১ টাকা ১৫ পয়সা। অর্থাৎ ১০০ রুপিতে মিলছে ৮৭ টাকা।
এর আগে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর ১০০ রুপিতে মিলেছিল ৮৯ টাকা। ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতি রুপি ৮৮ পয়সায় নেমেছিল।
এদিকে প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান দাঁড়িয়েছে ৮৫ টাকা ৩৩ পয়সা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে। তবে সাধারণ মানুষ, যারা ভ্রমণ করতে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের প্রায় ৮৮ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে ডলার।
এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এ ভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তীব্র সংকটে অর্থনীতিও।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা ও বহুবিধ পতনের মধ্য দিয়ে চলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকের পরও এ অবস্থা চলতে থাকলে গভীরতর মন্দায় পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতি।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্র চীনে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে এ ভাইরাসের প্রভাবে যে ক্ষতির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, বাস্তবে পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেক বেশি খারাপ।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড স্টাডিজের (সিএসআইএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে চীনের উৎপাদন ও সেবা খাতে রেকর্ড পতন হয়। গাড়ি বিক্রি কমে যায় রেকর্ড ৮০ শতাংশ। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দেশটির রফতানির পতন হয় ১৭ দশমিক ২ শতাংশ। এ অবস্থায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পতন হবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এমন হলে তা হবে ১৯৯২ সালে প্রান্তিক অনুযায়ী পরিসংখ্যান প্রকাশ শুরুর পর চীনের প্রথম আর্থিক সংকোচন।
এসআই/জেডএ/জেআইএম