বুধবার থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে ব্যাংক
বুধবার (১৮ মার্চ) থেকে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরু করবে। এতে করোনাভাইরাসের কারণে দেশের পুঁজিবাজারে যে ধস নেমেছে, তা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য নিশ্চিত করেন তারা।
এ সময় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘দেশের পুঁজিবাজার উঠতে ছিল হঠাৎ করে করোনাভাইরাস আসার পর ভয় পেয়ে অনেকে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এখনই ওই ২০০ কোটি টাকা যেটা দেয়া হয়েছে (৫০টি ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা করে পুঁজিবাজারের জন্য দিয়েছে) সেখানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মতো আছে। ওই টাকার সৎ ব্যবহার করা উচিত। প্রত্যেকটা ব্যাংক রাজি, বাংলাদেশ ব্যাংক যে শর্তগুলো দিয়েছে, ওই শর্ত সাপেক্ষেই বুধবার (১৮ মার্চ) থেকে আমরা শেয়ার কেনার জন্য বসব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে প্রায় ৫০টার মতো ব্যাংক আছে। সবাই ২০০ কোটি টাকা করে একবারে কিনবে না। ক্রমান্বয়ে কিনবে। এটা মনিটরিং করা হবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। হঠাৎ করে একজন ২০ কোটি টাকার শেয়ার কিনবে এটা হবে না। যখন যা প্রয়োজন একটা বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য, তা-ই করা হবে। ৫০০ বা ৬০০ কোটি টাকার বেশি যেন শেয়ার কেনা না হয়। কারণ হঠাৎ করে ১০০০ কোটি টাকার শেয়ার কেনা হলো, পরের দিন ধস হয়ে গেল, এটা যেন না হয়।’
এ সময় অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ‘পুঁজিবাজারে এখন যে স্থবিরতা বিরাজ করছে, ধীরে ধীরে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এটাই ছিল সভার মূল বিষয়। আমরা সরকারের প্রস্তাবের সঙ্গে মোটামুটিভাবে একমত। দু-একটা বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসে বুঝে নিতে হবে। এখানে মেজর (বড় ধরনের) কিছু নেই।’
দেশের ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সবাই আতঙ্কগ্রস্ত। অনেকেই আছেন, পুঁজিবাজার থেকে শেয়ার বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন। ১০ টাকার শেয়ার ৫ টাকায় বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন। তাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা আজক বসেছি এখানে, তাদের জন্য কিছু করতে পারি কি না। এ ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংকগুলো হলো প্রাথমিক উৎস। তারা সবাই আশ্বস্ত করেছেন, তারা বিনিয়োগ করবেন। পুঁজিবাজারের কেউ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভাইরাস যখন আসেনি, তখন কিন্তু মার্কেট ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছিল। হঠাৎ করে চীনে যখন ভাইরাস হানা দিল, সঙ্গে সঙ্গে মার্কেট কমা শুরু করল। এই সময়ে সবাইকে যে জোর করে রাখব, সেই ব্যবস্থা নেই। আমাদের খারাপ লাগে। জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে আমাদের তো কিছু দায়িত্ব আছে। দায়িত্ব হলো, সবাইকে যথাযথভাবে বলা। তারা তো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পুঁজিবাজার যেন একটি জায়গায় আসে, এখন স্থিতিশীল হলে তো লাভ নেই। পুঁজিবাজারকে আগে ওঠাতে হবে। উঠিয়ে স্থিতিশীল করতে হবে।’
পিডি/এফআর/জেআইএম