ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা নিশ্চিতের নির্দেশ
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ক্ষুদ্র মাঝারি ও কুটির শিল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে যাতে শুধু ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা ঋণ পান, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
আসন্ন রমজান উপলক্ষে ভোক্তা সাধারণের জন্য নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্যপণ্য নিশ্চিতকরণ, শিল্পখাতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ যথাযথ বাস্তবায়ন ও করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ বিষয়ক সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনসহ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি), বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসসি) চেয়ারম্যান, বিএসটিআই ও বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র মাঝারি ও কুটির শিল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ যাতে শুধু ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তারা পান সেটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো প্রকার দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
কামাল আহমেদ মজুমদার এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চিনিকলগুলোর শ্রমিক,কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ করার জন্য বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাঠ পর্যায়ে লবণ উৎপাদন যাতে অব্যাহত থাকে এবং করোনার কারণে লবণচাষীরা যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে বিসিককে সজাগ থাকতে হবে। প্রতিমন্ত্রী এ সময় করোনার কারণে চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকদের তৎপর থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক টেন্ডারের অধীনে দেশের মানসম্মত পণ্য ক্রয়ের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি দফতরগুলো যাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য ব্যবহার করে সেটি নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আরও তৎপর হতে হবে। এছাড়া, সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রিম কর হতে অব্যাহতি প্রদান, সারের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারের ভর্তুকির অর্থ শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান এবং দেশীয় হালকা শিল্পের অনুকূলে ট্যাক্স অবকাঠামো প্রবর্তন করা বিষয়ে আসন্ন বাজেট অধিবেশনের আগেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোট পাঁচটি ঋণ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন, যার মধ্যে প্যাকেজ-২ এর আওতায় ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বল্প সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ২০ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজটি ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারিখাতের উদ্যোগণের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে বণ্টনের জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) একগুচ্ছ সুপারিশমালা প্রণয়ন করে। এ সুপারিশমালার আলোকে ঋণ বিতরণ নীতিমালা প্রস্তুত করছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ তহবিল থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ প্রদান করা হবে। এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের ৪ শতাংশ ঋণগ্রহিতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট পাঁচ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রদান করবে।
এমইউএইচ/এমএসএইচ/পিআর