স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে বীমা অফিস খুলে দেয়ার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫৭ পিএম, ০১ মে ২০২০

সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশে ব্যবসা করা বীমা কোম্পানিগুলো। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকায় একদিকে গ্রাহকরা বীমা দাবির টাকা পাচ্ছেন না, অন্যদিকে পলিসি বিক্রি করতে না পারায় কোম্পানিগুলোও ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বীমা কোম্পানির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে বীমার অফিস খুলে দেয়ার দাবি উঠেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত দুই প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা করপোরেশন ও সাধারণ বিমা করপোরেশনসহ দেশি-বিদেশি ৭৮টি কোম্পানি দেশি বীমা ব্যবসা করছে। এর মধ্যে জীবন বীমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩২টি। আর সাধারণ বীমা কোম্পানি ৪৬টি।

সরকারের সাধারণ ছুটির কারণে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ থাকলেও বেশিরভাগ কোম্পানি গোপনে অফিস খুলছে এবং কর্মকর্তা ও কর্মীদের অফিসে আসতে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে বিভিন্ন কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ ছুটির মধ্যে বেশিরভাগ বীমা কোম্পানির অনলাইন সেবা চালু রয়েছে। গ্রাহকরা তাদের পলিসির প্রিমিয়াম ঘরে বসেই বিকাশ, রকেট অথবা যেকোনো ব্যাংকের ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে জমা করতে পারছেন। এ বিষয়ে বীমা কোম্পানিগুলো থেকে গ্রাহকদের মোবাইলেও এসএমএস দেয়া হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে কয়েকটি বীমা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বীমা অফিস খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাদের যুক্তি উন্নয়ন কর্মকর্তাদের কমিশন দেয়া, গ্রাহকের এসবি (সারভাইভাল বেনিফিট) দেয়া, যেকোনো দাবি পরিশোধ করার জন্য বীমা অফিস খুলে দেয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও এস এম নুরুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে বীমা অফিস খুলে দেয়া প্রয়োজন। এতে পেশাগত সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের পরিবার এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়ের জীবন রক্ষা বীমার মাধ্যমে করা যাবে। এতে কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকা সম্ভব হবে। ৫ মের পর অথবা আগে অফিস খুলে দিলে বীমা কর্মীদের ও গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ করতে সহজ হবে। তীব্র প্রতিযোগিতা ও নানাবিধ কারণে বীমাখাত এমনিতেই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এখন ছুটি দীর্ঘায়িত হলে তা আরও বড় সংকটে পড়বে।

ডেল্টা লাইফের এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যেও আমাদের অফিস করতে হচ্ছে। ওপর থেকে চাপ দিয়ে কর্মকর্তাদের অফিসে আনা হচ্ছে। কিন্তু কোনো ধরনের সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ব্যাংক কর্মকর্তাদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা ঘোষণা করা হলেও, আমাদের জন্য কোনো কিছুই করা হচ্ছে না। কর্মকর্তা ও কর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে অফিস করছেন। আমাদের দাবি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখে ব্যাংকের মতো সুবিধা ঘোষণা করে আনুষ্ঠানিকভাবে বীমা অফিস খুলে দেয়া হোক। অথবা সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হোক।

একটি জীবন বীমা কোম্পানির সিইও বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমা পলিসির দাবি ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার। গ্রাহক আবেদন না করলেও এই দাবি পরিশোধ করতে বলেছে আইডিআরএ। অথচ অফিস খোলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। অফিস না খুললে আমরা কীভাবে বীমা দাবি দেব? আমি মনে করে আইডিআরএ নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য এবং গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার জন্য বীমা কোম্পানির অফিস খুলে দেয়া উচিত।

এমএএস/এমএসএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।