দুধ সংরক্ষণে সহজ শর্তে ঋণ দেবে রূপালী ব্যাংক
বাংলাদেশে বর্তমানে ১২ লাখ দুগ্ধ খামারের সঙ্গে ১ কোটি মানুষ জড়িত। বছরে এসব খামারে প্রায় ১ কোটি মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয়। দুধের একটা বড় অংশ যায় প্রক্রিয়াজাতকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বাকি অংশ যায় মিষ্টির দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে সারাদেশ লকডাউন থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দুগ্ধ খামারিরা।
সারাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দুধের চাহিদা একেবারেই নেই। তাই অধিকাংশ খামারিই তাদের উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। ফেলে দিতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকার দুধ। সেই সঙ্গে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারিদের।
এই অবস্থায় দুগ্ধ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে খামারিদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের নির্দেশনায় দুগ্ধ খামারিদের মাঝে দুধ থেকে ঘি বানানোর জন্য ঋণ বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রূপালী ব্যাংক। সহজ শর্তের ও স্বল্প সুদের এই ঋণ গ্রহণ করে দুগ্ধ খামারিরা উৎপাদিত দুধ থেকে ঘি বানিয়ে সংরক্ষণ করতে পারবে। যার ফলে তাদেরকে আর দুধ ফেলে দিতে হবে না।
এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘করোনা মহামারিতে যখন দেশের দুগ্ধ শিল্প বন্ধ প্রায়, আমাদের প্রান্তিক গোয়ালারা যখন অসহায়, তখন আমরাই এগ্রো খাতে দুধ থেকে ঘি বানানোর জন্য ঋণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি’।
তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে সারাদেশ যখন লকডাউন হয়ে গেল, তখন আমরা দেখলাম দেশের প্রায় ১২ লাখ দুগ্ধ খামারি তাদের উৎপাদিত দুধ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। দুধ বিক্রি করতে না পারায় তারা সেগুলো ফেলে দিচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন দুগ্ধ উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণতার কাছাকাছি।
গত ১০ বছরে দেশে দুধ উৎপাদন বেড়েছে সোয়া চার গুণ। এই পরিস্থিতিতে এই খাতের হাল যদি কেউ না ধরে তাহলে আমরা আবার পিছিয়ে যাব। এসডিজি অর্জনে সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। তাই আমরা দুধ থেকে ঘি বানিয়ে সংরক্ষণের জন্য ঋণ নিয়ে এগিয়ে এসেছি।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ আশা প্রকাশ করেছেন, রূপালী ব্যাংকের দেখাদেখি অন্য ব্যাংকগুলোও দুগ্ধ খামারিদের পাশে এগিয়ে আসবে। এই ঋণ গ্রহণে আগ্রহী খামারিদেরকে রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কৃষি, পল্লী ঋণ ও মাইক্রো ক্রেডিট বিভাগে (ফোন ৯৫৮৯৩৫৭) বা নিকটস্ত শাখায় যোগাযোগ করতে বলেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এসআই/এমআরএম