করোনা উপসর্গে গ্রাহকের মৃত্যু, বীমা দাবি দিল এলআইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ০৬ মে ২০২০

কারোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে ৫ জন গ্রাহকের ৪৫ লাখ টাকার মৃত্যু দাবি পরিশোধ করেছে দেশের একমাত্র দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানার জীবন বীমা কোম্পানি লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন (এলআইসি) অব বাংলাদেশ লিমিটেড।

তাদের মধ্যে তিনজন গ্রাহকই করোনা উপসর্গ (জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও ডায়রিয়া) নিয়ে মারা গেছেন বলে এলআইসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অরুপ দাসগুপ্ত জাগো নিউজকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা যে বীমা দাবি দিয়েছি তার মধ্যে তিনজনের করোনা হতে পারে। কারণ মৃত্যু সনদে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, ডায়রিয়া সব একসঙ্গে লেখা আছে।

অরুপ দাস বলেন, মহামারির বীমা কাভারেজ আমাদের কারও নেই। আমরা পেপার দেখলেই বুঝতে পারি কোনটা স্বাভাবিক মৃত্যু, কোনটা করোনায় মৃত্যু। তারপরও আমরা সব গ্রাহকের মৃত্যু দাবি পরিশোধ করছি। কিন্তু এটা যদি ব্যাপক হারে ছড়ায় তখন কোন কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতা কতটুকু তার ওপর নির্ভর করবে দাবি পরিশোধ। তবে আমাদের দেয়ার পলিসি আছে। আমরা যতক্ষণ পারি গ্রাহকের করোনায় মৃত্যু হলেও বীমা দাবি পরিশোধ করবো।

তিনি বলেন, সরকারের যে সাধারণ ছুটি চলছে এ সময়ের মধ্যে আমরা ৫ জন গ্রাহকের মৃত্যু দাবি পরিশোধ করেছি। এসব গ্রাহকের নমিনিদের মৃত্যু দাবি বাবদ দেয়া হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা। অনলাইনে এই বীমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে।

সাধারণ ছুটির কারণে অফিসের সব কাজ স্বাভাবিকভাবে না চললেও দাবি পরিশোধ ও প্রিমিয়াম সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে বলে জানা অরুপ দাস।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, অফিসের সব কাজ সেভাবে চলছে না। তবে মৃত্যু দাবির ক্ষেত্রে আমরা আমাদের অনলাইন পেমেন্ট চালু রেখেছি। আর ব্যাংক, বিকাশ, রকেটের মাধ্যমে প্রিমিয়াম নেয়ার কাজ চালু আছে। বীমা পলিসির প্রিমিয়াম জমা দেয়ার জন্য আমাদের ৬-৭টি অপশন রয়েছে, ৬-৭টি বড় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি আছে। গ্রাহক তার পছন্দমতো যেকোনো অপশনে বিনা খরচে প্রিমিয়াম জমা দিতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যেও গ্রাহকরা আমাদের বীমা পলিসি কিনতে পারবেন। এ জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে গ্রাহককে পলিসি কিনতে হবে। সেখানেই গ্রাহক তার পলিসির প্রিমিয়াম ক্যালকুলেশন (হিসাব) করতে পারবেন।

সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এক নির্দেশনায় করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থ সংকটে বীমা গ্রাহকদের সহযোগিতা করতে আবেদন ছাড়াই ৩০ দিনের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ বীমা পলিসির টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে ২৫ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে যেসব জীবন বীমা পলিসির গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে, সেসব পলিসির জন্য গ্রেস প্রিরিয়ড আরও ৪৫ দিন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ।

এ বিষয়ে এলআইসি বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে অরুপ দাস বলেন, এখনো আমাদের কোনো গ্রাহকের বীমা পলিসির মেয়াদ শেষ হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি কোনো গ্রাহক মারা যান, আমরা অনলাইনে গ্রাহকের বীমা পলিসি সংক্রান্ত কাগজ নিয়ে আসছি। মৃত্যু সনদ ও চিঠি লিখে আমাদের দিলেই আমরা অনলাইনে বীমা দাবির টাকা পরিশোধ করে দেব। যারা প্রিমিয়ামের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সুদ মওকুফ করে দিচ্ছি।

বন্ধের মধ্যে কর্মীদের বেতন ও কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরশোধ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা অনলাইনে সব কর্মীর কমিশন প্রদান করেছি, সবার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। লকডাউনের ক্ষেত্রে আমাদের বেতন-কমিশন প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি।

এমএএস/এমএসএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।