করোনা প্রতিরোধে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ১৭ মে ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চলমান পরিস্থিতিতে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রাণঘাতী এ সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পাশাপাশি স্বাস্থবিধিগুলো মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

রোববার (১৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুসরণ করে এ সার্কুলার জারি করেছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, দেশের প্রত্যেকটি জেলায় এখন কোভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তি আছেন। কোথাও সংক্রমণের হার কম, কোথাও স্থিতাবস্থায় আছে। আমাদের সকলের লক্ষ্য থাকা উচিত দ্রততম সময়ে সংক্রমণের হার হ্রাস করা। লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে সচল করার উদ্যোগ হিসাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। ঈদুল ফিতর আসন্ন বিধায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনসমাগম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিম্নলিখিত নির্দেশনাগুলো মেনে চলার অনুরোধ করা হলো।

নির্দেশনাগুলো হলো
১. ব্যাংক খোলার আগে মহামারি প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন, জীবাণুনাশক সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করুন। আপদকালীন পরিকল্পনা তৈরি করুন। আপদকালীন সংক্রমিত বস্তুর ডিসপোজাল এলাকায় স্থাপন করুন। সব ইউনিটের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণকে জোরদার করুন।

২. কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করুন। প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক ব্যবস্থা নথিভুক্ত করুন এবং যারা অসুস্থ অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা নিন।

৩. ব্যাংকের প্রবেশমুখে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র স্থাপন করুন বা তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা রাখুন এবং শুধুমাত্র স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ঢুকতে দিন।

৪. বায়ুচলাচল বৃদ্ধি করুন। সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এয়ারকন্ডিশনারের স্বাভাবিক ক্রিয়া নিশ্চিত করুন। বিশুদ্ধ বাতাস বৃদ্ধি করুন এবং এয়ারসিস্টেমের ফিরে আসা বাতাস বন্ধ রাখুন।

৫. সর্বসাধারণের ব্যবহার্য সুবিধাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন (যেমন কিউইং মেশিন, কাউন্টার, চিফার মেশিন, রোলার পেন, ক্যাশ কাউন্টার, এটিএম, জনসাধারণের বসার জায়গা ইত্যাদি)।

৬. জনসাধারণের চলাচলের এলাকা যেমন ব্যাংকিং লবি, এলিভেটর এবং তথ্য কেন্দ্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং ময়লা সময় মতো পরিষ্কার করুন।

৭. এটিএম বুথে প্রবেশ করার লাইনে দাঁড়ানোর বা ব্যবহারের সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য লাইনে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা স্থাপন করা।

৮. ব্যবসায়িক কাজে ব্যাংকে আসা মানুষের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রতিদিনের ব্যবসায়িক কাজের জন্য ই-ব্যাংকিং অথবা এটিএম ব্যবহারের পরামর্শ দিন। কাউন্টারে জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা করুন এবং সকলকে হাত পরিষ্কারের ব্যাপারে সচেতন করুন।

৯. স্টাফদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জোরদার করতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে। হাতের হাইজিনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। হাঁচি দেয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢাকতে হবে।

১০. ব্যাংকে আগত সকলকে মাস্ক পরতে হবে।

১১. পোস্টার ইলেকট্রনিক্স স্ক্রিন এবং বুলেটিন বোর্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জ্ঞান পরিবেশন জোরদার করুন।

১২. যদি নিশ্চিত কোভিড ১৯ রোগী থাকে তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে এবং একই সাথে এয়ার কন্ডিশনিং ও ভেন্টিলেশন সিস্টেমকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মূল্যায়ন হওয়ার আগে ফের চালু করা উচিত হবে না।

১৩. মাঝারি ও উচ্চ ঝঁকিপূর্ণ এলাকায় ব্যাংকগুলোকে তাদের বিজনেস আওয়ার সংক্ষিপ্ত করতে এবং আগত লোকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

এসআই/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।