প্রমোশন অর্ডার পাওয়ার আগেই করোনায় প্রাণ গেল ব্যাংক কর্মকর্তার
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) মাহবুব এলাহীর মৃত্যু হয়েছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রোববার (১৭ মে) রাত রাত ৯টার দিকে কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে মৃত্যু তার হয়। সোনালী ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্যাংকের মতিঝিলে লোকাল অফিসে কর্মরত ছিলেন মাহবুব এলাহী। করোনার লক্ষণে দেখা দেয়ায় গত ৭ মে ছুটি নিয়ে কুমিল্লায় নিজ বাড়ি চলে যান তিনি। গত ১০ মে পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কয়েক দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান তিনি। রোববার রাতে নিজ বাসাতেই তার মৃত্যুু হয়। তার একমাস বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। মেয়েসহ মাহবুবের স্ত্রী চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ে রয়েছেন।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে ব্যাংকের দেয়া সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) তালিকায় তার নাম রয়েছে। কিন্তু প্রমোশন অর্ডার হাতে পাওয়ার আগেই মারা গেলেন এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে মাহবুব এলাহীর মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তিনি নিবেদিত একজন ব্যাংকার ছিলেন। চালান সেকশনের একজন দক্ষ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, লোকাল অফিস লকডাউন করা হবে কি-না এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।
সোনালী ব্যাংক সূত্র জানায়, করোনার বিষয়টি কাউকে না প্রকাশ করতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে নিষেধ করেন। তবে চিকিৎসা বিষয়টি ভালোভাবে চালিয়ে যেতে ছুটি দেন। রোববার বিকেলে মাহবুব এলাহী নিজেই ফেসবুকে স্ট্যাটাসে করোনা পজিটিভ হওয়ার কথা লেখেন। রাত ৯টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, সোনালী ব্যাংকের ৩০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েয়ে মোট ৪ জন ব্যাংকার মৃত্যুবরণ করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (১৫ মে) রূপালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সহিদুল ইসলাম খান রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে দ্য সিটি ব্যাংকের আরও দুজন মারা যান। তাদের মধ্যে গত মঙ্গলবার (১২ মে) রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবু সাঈদ নামের এক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। তিনি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সেন্ট্রাল ক্লিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার আগে ২৬ এপ্রিল ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের মুজতবা শাহরিয়ার নামের এক কর্মকর্তা মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর বাইরে করোনা লক্ষণ নিয়ে চট্টগ্রামের মারা গেছেন আরও ২ ব্যাংক কর্মকর্তা।
এসআই/এমএসএইচ