‘৫-৬ মাসের মধ্যে আগের জায়গায় ফিরবে পোশাক খাত’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৭ পিএম, ০৯ জুন ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে সমস্যায় পড়া দেশের পোশাক খাত আগামী পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে আগের জায়গায় ফিরে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দেশের নিট গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি মো. ফজলুল হক।

করোনাভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলায় সরকারের ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে মঙ্গলবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফজলুল হক বলেন, গার্মেন্টসের ব্যাপারটা একটু আলাদা, অন্য সব সেক্টর থেকে। গার্মেন্টসের সমস্যা দ্বিমাত্রিক। একটা লোকাল প্রবলেম, অন্যটা ইন্টারন্যাশনাল। সরকারি ঋণ অথবা আমি আমার টাকা দিয়ে হয়তো এখানে কারখানা চালু রাখলাম। কিন্তু যতক্ষণ চাহিদা যথাযথভাবে সৃষ্টি না হচ্ছে, বায়ার থেকে আমরা অর্ডার না পাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা পূর্ণ সক্ষমতায় ফিরে যেতে পারছি না।

তিনি বলেন, আমরা কঠিন একটা সময় পার করছি। আমি বরাবরই আশাবাদী একটা লোক। আমি আশাকরি সব যদি ঠিকঠাক থাকে, আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে আমরা আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারব এবং কপাল ভালো থাকলে আমরা আগের থেকেও ভালো করতে পারি।

এ আশার পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে নানা রকম বাণিজ্যযুদ্ধ এবং ইউরোপ ও আমেরিকা কয়েকদিন আগে একটি অনানুষ্ঠানিক জোট ঘোষণা করেছে। একটা বড় ধরনের চীনবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। আমরা আশা করছি ভালো অর্ডার ওখান থেকে স্থানান্তরিত হবে। তবে সেটা কালকেই হবে না, এর জন্য সময় লাগবে। এ বছরের শেষের দিকে গার্মেন্টস খাতের অর্ডারের ক্ষেত্রে আমরা একটা ভালো ফ্লো আশা করতে পারি। তবে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গার্মেন্টগুলোকে টিকিয়ে রাখা।

তিনি বলেন, বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ছয় মাস কারখানাগুলো টিকিয়ে রাখা। কারণ যদি কারখানা চালু না থাকে, তাহলে আমার সুযোগ তৈরি হলেও কোনো বন্ধ কারখানায় কেউ অর্ডার দেবে না, এটা খুবই স্বাভাবিক। কারখানা চালু হওয়া বড় একটি চ্যালেঞ্জ। আমি মনে করি গার্মেন্টস কারখানার সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কারখানাগুলো আমরা কীভাবে চালু রাখতে পারব। শ্রমিকদের বেতন, মজুরি, অন্যান্য আনুষঙ্গিক অনেক বড় খরচ। মাঝারি মানের একটি ফ্যাক্টরিতে মাসে চার-পাঁচ কোটি টাকা খরচ করতে হয়, কারখানা চালু রাখার জন্য, সরাসরি উৎপাদন খরচের বাইরে।

তিনি বলেন, গার্মেন্টসের জন্য সরকারের প্যাকেজ যে মেকানিজমে তৈরি হয়েছে, এটা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত অন্য কারও হাতে এই টাকা যায়নি। সরকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তা খুবই ভালো একটা প্যাকেজ গার্মেন্টস খাতের জন্য। এর জন্য অন্তত কারখানা চালু রাখা গেছে। কিন্তু আগামী এক-দেড় মাস পর কী হবে সেটা নিয়ে একটা প্রশ্ন আছে। এটা নির্ভর করছে আমরা অর্ডার কী পরিমাণে পাই এবং তারপর সহায়তা কী পরিমাণ লাগবে।

কারখানা চালু রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, কারখানা খুলে দেয়ার জন্য হয়তো আমরা আকুল ছিলাম। এর পেছনে বড় কারণ হচ্ছে- মে মাসে আমদের এক বিলিয়ন ডলারের ওপরে রফতানি হয়েছে। জুনে হয়তো দুই বিলিয়ন ডলার কাছাকাছি হবে। আমরা কিছু অর্ডার পাচ্ছি, ৩০-৪০ শতাংশ। এটাও আমরা পেতাম না যদি কারখানা চালু না হতো।

তিনি আরও বলেন, সবাই মিলে কীভাবে কারখানাগুলো চালু রাখা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে শ্রমিক ছাঁটাই হবে না এবং তার চেয়ে বড় কথা আমরা যে সম্ভাবনার কথা বলছি, উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছি, সেটাকে যেন আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারি। তখন যেন এমন না হয় আমাদের কাছে অর্ডার এসেছে, কিন্তু কারখানা বন্ধ থাকার কারণে আমরা অর্ডারগুলো নিতে পারিনি। এ রকম পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়।

এমএএস/বিএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।