করোনায় গ্রাহক ও কর্মীর নিরাপত্তায় স্বীকৃতি পেল প্রাইম ব্যাংক
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষিতে গ্রাহক ও কর্মীবাহিনীর নিরাপত্তায় কার্যকর উদ্যোগের জন্য এশিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃতি পেল প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। সোমবার (২০ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্বখ্যাত ফাইন্যান্সিয়াল প্রকাশনা -- ইউরোমানি -- প্রাইম ব্যাংককে ‘এক্সিলেন্স ইন লিডারশিপ ইন এশিয়া ২০২০ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা ও নিরবচ্ছিন্ন সার্ভিস প্রদান এবং গ্রাহক ও কর্মীবাহিনীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করায় এ মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
এটি প্রাইম ব্যাংকের জন্য এক অনন্য সম্মান। কেননা দক্ষিণ এশিয়া থেকে একমাত্র ব্যাংক হিসেবে ব্যাংকটি এ পুরস্কার অর্জন করেছে। প্রাইম ব্যাংক বিশ্বের যেসব স্বনামধন্য ব্যাংকের সাথে এ খেতাব অর্জন করেছে তারা হলো- উত্তর আমেরিকার গোল্ডম্যান স্যাকস ও রয়াল ব্যাংক অব কানাডা, ইউরোপের বিএনপি প্যারিবাস ও ক্রেডিট এগ্রিকোল, মধ্যপ্রাচ্যের এইচএসবিসি এবং এশিয়া থেকে সিটি এনএন ও ডিবিএস সিঙ্গাপুর।
প্রতিষ্ঠার ২৫তম বছরের শুভক্ষণে প্রাইম ব্যাংক এই আন্তর্জাতিক সম্মান অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ বছরই ব্যাংকটি নিউইয়র্কভিত্তিক গ্লোবাল ফাইন্যান্স থেকে ‘বেস্ট ব্যাংক অ্যাওয়ার্ড ইন ব্যাংলাদেশ’ এবং হংকংভিত্তিক এশিয়া ফাইন্যান্স থেকে ‘বেস্ট ডিজিটাল ব্যাংক ইন বাংলাদেশ’ পুরস্কার পেয়েছে।
ইউরোমানির অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। প্রতি বছর বিশ্বের পাঁচটি মহাদেশের এক হাজারের বেশি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এ পুরস্কার অর্জনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
পুরস্কারের মানপত্রে ইউরোমানি উল্লেখ করে : ‘কোভিড-১৯ দুর্যোগের সময়কালে প্রাইম ব্যাংককে কখনোই এক মুহূর্তের জন্য সার্ভিস বন্ধ করতে হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রাইম ব্যাংকই প্রথম কর্মীবাহিনীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় সচেতনতা কার্যক্রম শুরু করে, যা ৩০ জানুয়ারি, ২০২০ এ শুরু করা হয়। এই অঞ্চলে ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রাহেল আহমেদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ব্যাংকটি সর্বস্তরের কর্মীবাহিনী ও গ্রাহকদের নিরাপত্তায় নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ বছরের শুরুতেই প্রাইম ব্যাংক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সেবায় বিদ্যানন্দ ও জাগো ফাউন্ডেশনসহ পাঁচটি স্থানীয় এনজিওর সাথে অর্থ সংগ্রহের জন্য পার্টনারশিপ শুরু করে।’
মানপত্রে ইউরোমানি আরও উল্লেখ করে : ‘গ্রাহকদের আমানতের সুরক্ষায় প্রাইম ব্যাংক এই সংকটকালে সাইবার নিরাপত্তা ও জালিয়াতি প্রতিরোধকল্পে ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম গ্রহণ করে। গ্রাহকদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ও স্থাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সাথে পার্টনারশিপ চালু করে। ব্যাংকের বেশির ভাগ কর্মকর্তার বাসা থেকে কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়। ব্যাংকটি কর্মকর্তাদের দেশের ২৫টি হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে জুম ও ওয়েবেক্সের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জরুরি ব্যাংকিংসেবা প্রদানে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে প্রাইম ব্যাংক। তৈরি পোশাক খাতের জন্য সরকারের ৫৯০ মিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজের বড় অংশ ব্যবস্থাপনা ভূমিকা রাখে ব্যাংকটি।
আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন সম্পর্কে প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেল আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গ্রাহক ও কর্মীবাহিনীর নিরাপত্তায় কার্যকর উদ্যোগের জন্য এশিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া প্রাইম ব্যাংকের জন্য অনেক বড় গর্বের ও সম্মানের। মহামারির প্রথম দিন থেকেই আমরা গ্রাহক, কর্মকর্তা ও কমিউনিটির নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছি। কোভিড-১৯ দুর্যোগকালের ক্রম পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে আমরা পূর্বেই স্বপ্রণোদিতভাবে দ্রুত প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও সচেতন কার্যক্রম গ্রহণ করি।
ফ্রন্টলাইন কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই কেবল আমরা গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সার্ভিস প্রদান করেছি। আমরা বেশিরভাগ কর্মকর্তাকে বাসা থেকে কাজ করার অনুমতি দিয়েছি, কিন্তু গ্রাহকসেবার মানে কোনো ছাড় দেইনি।
তিনি আরও বলেন, ‘মহামারিটি বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়ার সাথে সাথে প্রাইম ব্যাংক স্বপ্রণোদিত হয়ে বিজনেস কন্টিনিউটি প্ল্যান বাস্তবায়ন করে। ফলে মহামারির সময় অনেক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এ ধরনের বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সময়োপযোগী ও সাহসী পদক্ষেপ নিতে আমাদের আরও উদ্বুদ্ধ করবে এবং বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন মানদণ্ড সৃষ্টিতে সাহায্য করবে। আমরা সম্মিলিতভাবে এই সংকটের মোকাবিলা করবো। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একতাবদ্ধতার শক্তিই এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে আমাদের সাহায্য করবে।’
এসআই/এসএইচএস/এমএস