মহামারিতে তিন ব্যাংকের মুনাফায় পতন, বেড়েছে দু’টির
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম আঘাত হানে গত ৮ মার্চ। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। ফলে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যবসা-বাণিজ্যে সব থেকে বড় ব্যাঘাত ঘটে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে আসায় এপ্রিল-জুন এই তিন মাসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের মুনাফায় ধাক্কা লেগেছে। অবশ্য ব্যতিক্রম কিছু দৃশ্যও আছে। করোনা মহামারির মধ্যে মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার বলে কিছু প্রতিষ্ঠানের মুনাফা উল্টো বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনি তথ্য উঠে আসছে।
নিয়ম অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে প্রতি তিন মাসে পর পর তাদের ব্যবসার আয়-ব্যয়ের তথ্য প্রকাশ করতে হয়। তারই আলোকে বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে ৫টি ব্যাংক আর্থিক প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে তিনটির মুনাফা কমেছে এবং দু’টির মুনাফা বেড়েছে।
এনসিসি ব্যাংক
চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩৬ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ৮৪ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি মুনাফা কমেছে ৪৮ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় ধস নামায় ছয় মাসের হিসাবেও কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ১৯ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ২৫ পয়সা।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক
চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৪৭ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ৬৩ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি মুনাফা কমেছে ১৬ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমায় ছয় মাসের হিসাবে কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ১৩ পয়সা।
সাউথ ইস্ট ব্যাংক
চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৬৫ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৮২ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি মুনাফা কমেছে ১ টাকা ১৭ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফায় ধস নামায় ছয় মাসের হিসাবে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৬৩ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ২৫ পয়সা।
ইবিএল
চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৯১ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ৮৯ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি মুনাফা বেড়েছে ২ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বাড়লেও ছয় মাসের হিসাবে কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৯৪ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৯৫ পয়সা।
ট্রাস্ট ব্যাংক
চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ১ টাকা ১৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৮ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি মুনাফা বেড়েছে ৬ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকের পাশাপাশি ছয় মাসের হিসাবেও কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৭৭ পয়সা।
এমএএস/এসএইচএস/জেআইএম