প্রণোদনাসহ সাত দফা দাবি হোটেল-রেস্তোরাঁকর্মীদের
বিধিনিষেধের মধ্যে ১০ হাজার টাকা প্রণোদনা এবং গত বছর করোনায় চাকরি হারানো শ্রমিকদের বকেয়া মজুরিসহ চাকরিতে পুনর্বহাল, পূর্ণ রেশনিং চালুসহ সাত দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে হোটেল-রেস্টুরেন্ট-সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন।
এসব দাবিতে ফেডারেশনের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আক্তারুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও এসকে গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম টিটু প্রমুখ।
তারা বলেন, ‘গতবার লকডাউন ও রমজান কাছাকাছি হওয়ায় মালিকরা ব্যাপকহারে শ্রমিকদের মজুরি ও উৎসব ভাতা না দিয়ে চাকরিচ্যুত করেন এবং পরবর্তীতে সীমিত আকারে শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু হলে চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহাল না করে সীমিত শ্রমিক দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালু করে ১৪-১৫ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করেন। এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে।’
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘হোটেল সেক্টরে সরকারি নির্দেশনায় অনলাইন ভিত্তিক খাবার সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোকে লাভবান করবে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত দ্বিচারিতার সামিল।’
আক্তারুজ্জামান খান বলেন, ‘হোটেল সেক্টরের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিতে উল্লিখিত সাত দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। এরপর সমাবেশ শেষে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আক্তারুজ্জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর তার কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
তাদের সাত দফা দাবিগুলো হলো-
১. হোটেল শ্রমিকদের পূর্ণাঙ্গ মজুরি ও উৎসবভাতাসহ প্রাপ্ত সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
২. মহামারি দুর্যোগের এই সময় হোটেল সেক্টরে কোনো লে-অফ, অব্যাহতি বা ছাঁটাই করা যাবে না। এ বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট পরিপত্র জারির অনুরোধ।
৩. যেসব শ্রমিক ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের আইসোলেশন ও যথাযথ চিকিৎসার সমুদয় দায়িত্ব সরকার ও মালিককে বহন করতে হবে।
৪. হোটেলশ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৫. কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করাসহ ঝুঁকিভাতা এবং করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এক জীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
৬. প্রণোদনা হিসেবে মাসিক ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা সরাসরি সরকার কর্তৃক শ্রমিকদের প্রদান করতে হবে।
৭. করোনাকালীন শ্রমিকদের বাড়িভাড়া মওকুফের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা করতে হবে।
এসব দাবি সুবিবেচনায় নিয়ে করোনা মহামারি মোকাবিলায় হোটেলশিল্পের অসহায় শ্রমিকদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান তারা।
এফএইচ/ইএ/এমকেএইচ