ফুটপাতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই, মাস্ক পরছেন না বিক্রেতারা
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে মিরপুর ১০ নম্বরের শাহ্আলী মার্কেটের আশপাশ ও ফায়ার সার্ভিসের সামনে ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তবে ঈদের মাত্র পাঁচ দিন বাকি থাকলেও নেই ক্রেতা। এ নিয়ে হতাশ বিক্রেতারা।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে— জানা সত্ত্বেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। সামাজিক দূরত্বেরও বালাই নেই। মাস্ক না পরার অজুহাতের শেষ নেই তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) মিরপুর-১০ নম্বর এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সব বয়সীদের পোশাক, শিশুদের খেলনার দোকান বেশি। পাশাপাশি খাবারের দোকানও বসিয়েছেন অনেকে। তবে ঈদের আগের হিসেবে ফুটপাতে ক্রেতাদের ভিড় নেই। বেশিরভাগ ক্রেতা দাম-দর করলেও কিনছেন না বলে জানান বিক্রেতারা।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর আবারও কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণায় সব পেশার মানুষই এখন গ্রামের দিকে ছুটছে। ফলে ঈদের কেনাকাটা নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। ফলে ঈদের পর আর বিধিনিষেধ না বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ীদের।
প্রায় তিন বছর ধরে ফুটপাতে গামছা, লুঙ্গি বিক্রি করেন শিবচরের শহীদ নূর। তিনি জানান, গত বছরের দুই ঈদের পর এবারও ঈদুল ফিতরে ভালো বেচা-কেনা হয়নি। আসন্ন ঈদুল আজহায় বিক্রি আরও কম হওয়ার শঙ্কায় নূর।
শহীদ নূর বলেন, ‘সকাল থেকেই বসে আছি। কোনো ক্রেতা নেই। এই ক’দিন দোকান খুইলা উপকার হইবো কই থেকা। মানুষ তো আগেই দেশে গ্যাছে গা। ফুটপাত থেকে কিইন্না পোশাক পরে গরিব মানুষ। তারা তো আরও আগেই চইল্যা গেছে। এখানে (ঢাকায়) কোনো কাজ নেই, তারা থাকবো কোন আশায়?’
তিনি আরও বলেন, ‘সব বাজার চলতেছে, দোকানপাটও খোলা। সব কিছু চলতেছে। খালি শপিংমল আর ফুটপাত বন্ধ। ফুটপাতে খালি করোনা হইতেছে। গার্মেন্ট, শিল্প-কারখানা সব চলতেছে। চাক্কা (গাড়ি) চলতেছে, করোনা কী খালি আমরাই ছড়াইতাছি।’
ফুটপাতের আরেক ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান বলেন, ‘লকডাউন তুলে দিলেও মানুষের হাতে টাকা নাই। বেচা-কেনা এবার হবে না। কোরবানিতে মানুষের কেনাকাটা থাকে গরু-ছাগলকেন্দ্রিক। জামা কাপড় কম কিনে।’
জুতা ব্যবসায়ায়ী বাশার বলেন, ‘এবার ঈদে বাড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। দুই সপ্তাহ দোকান বন্ধ। বাড়িতে কিছু নেয়ার মতো অবস্থাও নেই।’
এদিকে ফুটপাতে যারা কেনাকাটা করতে এসেছেন, তাদের বেশিরভাগই তরুণ। ভিড় এড়িয়ে অনেকেই কেনাকাটা করছেন, আবার অনেকেই ভিড়ে গা ভাসিয়ে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করছেন।
বিক্রেতাদের বেশিরভাগের মুখেই ছিল না মাস্ক। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলতে সমস্যা এবং গরমে বেশিক্ষণ মাস্ক রাখা যায় না বলছেন তারা।
এসএম/এএএইচ/জিকেএস