অর্থবছরের দ্বিতীয় সপ্তাহও ভালো গেল পুঁজিবাজারের
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করায় নতুন অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম সপ্তাহের মতো দ্বিতীয় সপ্তাহেও সীমিত লেনদেন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। লেনদেন সীমিত হলেও গেল সপ্তাহটি বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ ভালোই গেছে।
সপ্তাহজুড়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন আট হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে। এই নতুন অর্থবছরের প্রথম দুই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। সেইসঙ্গে বেড়েছে সবক’টি মূল্যসূচক। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতিও।
গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে আট কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে বাড়ে দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকা। সেই হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে। অর্থাৎ বাজার মূলধন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।
এদিকে, গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৯৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৬২ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক শূন্য এক শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ২৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৮০ শতাংশ।
অপরদিকে, ইসলামী শরিয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৬ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা দুই দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
সবকটি মূল্য সূচকের উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৬৭টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৪টির। আর ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ৬০২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৭৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বা চার দশমিক ৬১ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ছয় হাজার ৭০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ছয় হাজার ৪১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৩৯৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা চার দশমিক ৬১ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে—বেক্সিমকো, পাওয়ার গ্রিড, লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, সাউথইষ্ট ব্যাংক, আলিফ মেনুফ্যাকচারিং এবং আমান ফিড।
এমএএস/এএএইচ/এএসএম