দেরিতে হলেও জমবে ঈদ বাজার, আশা টিকাটুলির ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৫ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২২

ঈদ এলে রাজধানীর মার্কেটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে। পরিবারের কেনাকাটায় মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতারা থাকেন মার্কেটে। বিক্রেতারাও বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠেন এ সময়ে। তবে গত দুই বছর করোনার কবলে পড়ে বিশ্ব। এর প্রভাবে আমাদের দেশের মার্কেটগুলোতে ছিলো না কোনো বেচা-বিক্রি।

এখন করোনা থেকে অনেকটাই উত্তরণ ঘটেছে। এরই মধ্যে আবারও এসেছে রমজান। এবারের ঈদ বাজারে গত দুই বছরের লোকশান পোষানোর টার্গেট রয়েছে বিক্রেতাদের। তবে এখনও পর্যন্ত আশানুরূপ ক্রেতা পাচ্ছেন না তারা।

এ বছর বড় বাজেট নিয়ে ঈদ বাজারে ব্যবসা শুরু করলেও ক্রেতা না থাকায় চিন্তার ভাঁজ পড়ছে বিক্রেতাদের কপালে। তবুও রাজধানীর ব্যবসায়ীদের আশা ১৫ রমজানের পরই ভালো বিক্রি শুরু হবে।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) ঢাকার টিকাটুলিতে অবস্থিত রাজধানী মার্কেট ও চৌধুরী শপিং মল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

jagonews24

সরেজমিনে দেখা যায়, এসব মার্কেটের কসমেটিকস, জুয়েলারি, ইমিটেশন গোল্ড, জুতা-স্যান্ডেলসহ অন্যান্য পণ্যের তেমন বিক্রি নেই। চোখে পড়ার মতো ক্রেতারও দেখা মেলেনি সেখানে। তবে পোশাকের দোকানগুলোতে কিছু ক্রেতা থাকলেও তা ছিলো স্বাভাবিক দিনের মতোই।

বিক্রেতারা বলছেন, এখনও বিক্রি জমে উঠেনি। অনেক আশা নিয়ে দোকানে মালামাল উঠালেও তারা ক্রেতা পাচ্ছেন না। এভাবে চললে গত দুই (করোনার ঈদ) ঈদের মতো এবারও তাদের আনন্দ ফিকে হয়ে যাবে। তবে এখনও তারা আশা করছেন যে বিক্রি জমে উঠবে।

মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, এসব জায়গায় পোশাকে নতুনত্বের সঙ্গে দামের তারতম্য রয়েছে। প্রতিটি পোশাকেরই দাম কিছুটা বেড়েছে। এবারের ঈদ আয়োজনে রয়েছে- শিশুদের শার্ট, ফতুয়া, শর্ট স্লীভ, ফুল স্লীভ, লং প্যান্ট, কোয়ার্টার প্যান্ট ও বিভিন্ন রংয়ের পাঞ্জাবি।

এছাড়া মেয়ে শিশুদের জন্য রয়েছে- ফ্রক, পার্টি ফ্রক, ফ্যাশন টপস, থ্রি পিস, জাম্প স্যুট, নীমা সেট, টপ বটম সেট, লং ও শর্ট স্লীভ শার্ট, পলো টি-শার্ট ও কার্গো। এসব পোশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে।

পুরুষের জন্য রয়েছে- হালকা ও টেকসই ফেব্রিকের তৈরি বিভিন্ন রংয়ের পাঞ্জাবি কালেকশন, শার্ট, টি-শার্ট, ইজি কেয়ার শার্ট, পাজামা, ডেনিম প্যান্টস, কাইতেকি প্যান্টস, জিন্স ও গ্যাবাডিং।

jagonews24

আর মেয়েদের জন্য রয়েছে- থ্রি পিস, টু পিস, কাজ করা জর্জেট কামিজ, ভিসকস কামিজ, বিভিন্ন রংয়ের প্রিন্ট লং শার্ট, টপস, টিউনিকস, কামিজের জন্য রয়েছে এমব্রয়ডারি স্ক্যান্টস, পালাজ্জো ও লেগিংস। এসব পোশাক পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০ থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া মেয়েদের নানা কালেকশনের বোরকা পাওয়া যাচ্ছে ৬৫০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।

বিক্রি কেমন এ নিয়ে কথা হয় ইতি ফ্যাশনের ম্যানেজার মো. জনির সঙ্গে। তিনি জাগোনিউজকে বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে বিক্রি হয়নি। এবার পুরো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি, বিক্রি ভালো হবে। কিন্তু এখনও বিক্রি জমে উঠেনি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের আবারও আশাহত হতে হবে।

একই কথা বললেন কসমেটিকস ও ইমিটেশন ব্যবসায়ী লেডিস বিউটির ম্যানেজার মুন্না। তিনি বলেন, এখনও ক্রেতা আসেনি। যা বিক্রি হচ্ছে তা সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতোই। মনে হচ্ছে এবারও লোকসান গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের।

তবে ক্রেতা না এলেও একেবারে আশা ছাড়ছেন না অনেক ব্যবসায়ী। মার্কেটের স্বর্ণালিপি জুয়েলার্সের সত্ত্বাধিকারী জাকির হোসেন জাগোনিউজকে বলেন, এ বছর দ্রব্যমূল্যের দাম প্রচুর। অনেকেই করোনার অর্থসংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এসব কারণে এখনও তারা মার্কেটমুখী হয়নি।

‘তবে ১৫ রোজার পর থেকে ক্রেতার দেখা পাওয়া যাবে বলে আশা করি। প্রতি বছর রোজার মাঝামাঝিতে কেনাকাটা জমে উঠে। তাই এবারও জমবে বলে আশা করি।‘

ইএআর/এমপি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।