১৭ কারখানাকে তিন মাসের আলটিমেটাম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৫ পিএম, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে পাঁচ হাজার ২০৬টি কারখানা পরিদর্শন করে ১৭টিকে তিন মাসের আলটিমেটাম দিয়েছে কলকারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনারোধ ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি। তিন মাসের মধ্যে কারখানাগুলো তাদের যে ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণ করতে না পারলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান কমিটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।

কলকারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনারোধ ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির দ্বিতীয় সভা ছিল এটি। সভাশেষে সালমান ফজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আজ আমাদের জাতীয় কমিটির দ্বিতীয় সভা হয়েছে। এতে আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি। সেখানে আমাদের যে স্কোরিং হয়েছে, সে অনুসারে ১৭টি কারখানা ২৫ নম্বরের কম পেয়েছে। তাদের নোটিশ দিয়ে দিচ্ছি, তিন মাসের মধ্যে তাদের কমপ্লাইন্ট দিতে হবে, যদি না দিতে পারে তাহলে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, তাদের অবস্থা এতই নাজুক যে, তাদের যদি এর বেশি সময় দিই, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অঘটন যাতে না ঘটে, সে কারণে তাদের এ সময় দেওয়া হয়েছে। তারা যদি উন্নয়ন করে, ঘাটতি দূর করে, আমরা পরিদর্শন করে যদি সেটা দেখতে পাই, তখন তাদের আরও সময় দেবো।

তিনি আরও বলেন, ২০৬টি কারখানা ৫০ নম্বরের কম পেয়েছে। তাদের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে ছয় মাস সময় দেওয়া হবে। এরমধ্যে সফল না হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। বাকি যতগুলো আছে, সবাইকে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। তাদের এক বছরের মধ্যে কমপ্লাইন্ট দিতে হবে।

সালমান ফজলুর রহমান বলেন, ধরেন- আমরা একটি প্ল্যান (পরিকল্পনা) পাস করে দিয়েছি, কিন্তু যখন একটি ভবন নির্মাণ করা হয়, তখন তাতে সেই প্ল্যান অনুসরণ করা হয়েছে কি না, সেটা দেখার জন্য বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি হবে। এতে ভবনের অনুমোদনের পাশাপাশি, তার ইন্সপেকশনও ঠিকমতো হবে। রাজউক কিন্তু প্ল্যানের অনুমোদন দেয়, কিন্তু সেখানে বৈদ্যুতিক সংযোগ কেমন হবে, অবকাঠামো কেমন হবে, সেটা কিন্তু দেখা হচ্ছে না। কাজেই যখন বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি বাস্তবায়ন হবে, তখন সবকিছু সেই আইন অনুসারে ঠিক করা হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি করতে বলেছি।

‘তারপর আমরা ইন্টারিমে কী করবো, তাও ঠিক করেছি। একটি সাব-কমিটি করে দিয়েছি। স্ট্র্যাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার, তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে। এ প্ল্যানগুলো পাশের জন্য তাদের কর্তৃত্ব দেওয়া হবে। সব জায়গায় তালিকাটা আমরা জানিয়ে দেবো। এটা কিন্তু ইন্টারিম। যাদের নাম তালিকায় থাকবে, তারা সার্টিফাই করলেই কেবল প্ল্যানটা পাস হবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আইন অনুসারে পরিদর্শনের দায়িত্বটা শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডাইফি)। আমরা বলছি, তাদের শক্তিশালী করা দরকার। ডাইফিকে কর্তৃপক্ষ করে দিতে যদি সুপারিশ করতে পারি, তাহলে ইন্সপেকশন আরও বাড়বে। পাঁচ হাজার ২০৬টি কারখানা যে আমরা পরিদর্শন করেছি, যেহেতু জাতীয় কমিটি ও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এই দায়িত্বটা দিয়েছিলেন। ডাইফি, এফবিসিসিআইসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বিডা এই পরিদর্শন করেছে। কিন্তু এটি তো অ্যাডহক ভিত্তিতে করা হয়েছে। এটিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে। আমরা মনে করি, কাজটি যেহেতু আইন অনুসারে ডাইফির। আজকের জাতীয় কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে ডাইফিকেই শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন ৬০ হাজার কারখানা আছে। এগুলো সব তো আর পরিদর্শন করা সম্ভব না। আমরা পাঁচ হাজার ২০০টি করেছি। এরপর আবার ১০ হাজার করবো। এসব পরিদর্শন শেষে আমরা প্রতিবেদনগুলো এসব কারখানাকে জানিয়ে দেবো। আমি মনে করি, পরিদর্শন শেষে যাদের বলবো উন্নয়ন করতে, তারা যদি সেটা না করে, এরপর যদি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তবে তা সবার জন্য একটি বার্তা হিসেবে যাবে।

সালমান এফ রহমান বলেন, যদি ৬০ হাজার কারখানা পরিদর্শন না-ও করি, যদি এলোপাতাড়ি করা শুরু করি, যখন যাদের দুর্বলতা পাবো, তাদের ঠিক করতে সময় দেবো। না হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি যখন পাস হয়ে যাবে, তখন অনেক সমস্যা কমে যাবে। কারণ তারাই ভবন পরিদর্শনের দায়িত্ব পাবেন।

এমএএস/বিএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।