ল্যাপটপ আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩
এনবিআরে প্রাক-বাজেট আলোচনা

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ল্যাপটপ আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তির প্রায় সব পণ্যের আমদানি পর্যায়ে এআইটি (অগ্রিম আয়কর) ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটি এসব প্রস্তাব করে।

প্রাক বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক বিভাগের সদস্য মো. মাসুদ সাদেক। এতে ভ্যাট নীতির সদস্য জাকিয়া সুলতানা ও আয়কর নীতির সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব প্রসঙ্গে সংগঠনটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার বলেন, ইউরোপে যুদ্ধে টালমাটাল অর্থনীতির মধ্যেও গত বছর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়ানোর হয়েছে। বাড়তি ভ্যাটের কারণে ল্যাপটপের মূল্য আকাশচুম্বী। লোকাল ইন্ডাস্ট্রি কোয়ালিটি পণ্য উৎপাদন করতে পারেনি। আগে যেখানে ২৫-৩০ হাজার টাকায় ল্যাপটপ দিতে পারতাম, এখন আর ৫০ হাজার টাকার নিচে কোনো ল্যাপটপ দিতে পারছি না।

তিনি বলেন, দেশীয় উৎপাদকদের উৎসাহিত করতে ল্যাপটপ আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলেও নতুন করে ল্যাপটপ উৎপাদনের উদ্যোগ নেই। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো এই বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। প্রায় ২৫ ডলারের দাম বাড়া ও ভ্যাটের কারণে ল্যাপটপের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এর ফলে নিম্নমানের ল্যাপটপ বাজারজাত হচ্ছে, প্রচুর রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এসময় ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার নেটওয়ার্কিং ক্যাবলে কর কমানো, কম্পিউটার পণ্য সরবরাহে উৎসে কর কর্তন প্রত্যাহার ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট আমদানি পর্যায়ে শুল্ক মুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

খেলনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ টয় মার্চেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রান্সফরমার্স অ্যান্ড সুইচগিয়ার্স ৩০টি পণ্যে আমদানি ও রেগুলেটরি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

এদিকে, মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ তাদের প্রস্তাবে জানায়, প্রাথমিকভাবে মোবাইল ফোন কারখানাগুলোকে কিছু শুল্ক ও মূসক সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসবের কার্যকারিতা এ বছর শেষ হয়ে যাবে। অথচ চীন, ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে দেখা যায় কারখানাগুলোর পূর্ণ সক্ষমতা তৈরি হতে আরও বেশি সময় লাগে। তাই শুল্ক ও মূসকের সংশ্লিষ্ট এসআরওগুলোর সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করে সংগঠনটি।

অবৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোন ঠেকাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর আগে যে সিস্টেম বাস্তবায়িত করেছে, তা রাজস্ব বোর্ড পর্যালোচনা করে পুনরায় বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।

অন্যদিকে, জাতীয় তথ্য প্রযুক্তি নীতিমালা অনুযায়ী সফটওয়্যার ও আইটিএস খাতের কর ২০৩০ সাল পর্যন্ত বহাল রাখার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।

সংগঠনটির অন্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, মেধা পাচার রোধ সফটওয়্যার ও আইটি খাতের পেশাজীবীদের নির্দিষ্ট আয়ে আয়কর রেয়াত প্রদান, স্থানীয় সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবার মূসক পুরোপুরি তুলে দেওয়া, ডিজিটাল সিকিউরিটি পণ্যের উচ্চ শুল্ক কমিয়ে শূন্য শতাংশ করা ইত্যাদি।

সংগঠনটি জানায়, সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা রপ্তানিতে ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হয়। এই হার ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বেসিস।

এসএম/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।