ব্যয় কমলেও সময় বাড়লো

দেশ-বিদেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরির কাজে গতি নেই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৫২ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২৩

দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে বাস্তবায়নাধীন ‘ঢাকা কারিগরি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প’র মেয়াদ আবারও বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় কিছুটা কমলেও দফায় দফায় সময় বাড়ানোর কারণে কাঙ্ক্ষিত গতি আসছে না জনশক্তি তৈরির কাজে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

দেশে এবং বিদেশের বাজারে দক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থানের অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি এবং দেশে বিভিন্ন খাতে কর্মসংস্থানের সম্প্রসারণ ঘটানোই এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।

এছাড়া দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিএমইটির আওতায় দেশের সব কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, একই সঙ্গে দক্ষতা বাড়াতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কারিগরি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পের উদ্দেশ্য। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এলাকার আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানায়, মূল অনুমোদিত প্রকল্প জুলাই ২০১৬ থেকে জুন ২০২০ মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল। এরপর প্রথম সংশোধিত প্রস্তাবে জুন ২০২১, দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে জুন ২০২২ নাগাদ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। দুই দফায় সময় বাড়িয়েও প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় এবার তৃতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২৩ সালের জুন নাগাদ।

মূল অনুমোদিত প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৮৬ কোটি টাকা। প্রথম সংশোধিত প্রস্তাবে তা বেড়ে ৯৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা হয়। দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় অপরিবর্তিত থাকলেও বাড়ানো হয় সময়।

সবশেষ তৃতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পের ব্যয় কমে দাঁড়ায় ৯৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে ৬৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।

প্রধান কার্যক্রম: এ প্রকল্পের আওতায় প্রশাসনিক ভবন, পুরুষ ডরমিটরি ভবন, নারী ডরমিটরি ভবন, কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন, কর্মচারীদের আবাসিক ভবন এবং অন্যান্য পূর্ত (সাবস্টেশন, জেনারেটর ভবন, পাম্প হাউস, ভবনসমূহের লিফট ইত্যাদি) নির্মাণ। এছাড়া একটি মাইক্রোবাস, চার হাজার ২০৫টি আসবাবপত্র এবং দুই হাজার ৬০০টি বইপত্র ও সাময়িকী কেনা হবে।

তিন হাজার ৩০২টি অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি, দুটি ওয়েব বেইজড ই-লার্নিং অ্যান্ড এমআইএস এবং কারিকুলাম উন্নয়ন করা হবে প্রকল্পের আওতায়।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ: অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি খাতে ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ দুই কোটি ২১ লাখ টাকা সমন্বয়পূর্বক মোট ১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ক্রয় পদ্ধতি পরিবর্তন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার হালনাগাদ করার ফলে প্রকল্পের ব্যয় পরিবর্তন, আইএসডিবির কারিকুলামের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্যান্য মেশিনারি ও যন্ত্রপাতি এবং বইপত্র ও সাময়িকী অঙ্গের সমন্বয় ও সংশোধন করা।

প্রকল্পটিতে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কারিগরি শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও কর্মকালীন প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কারিগরি প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এ প্রকল্প। এছাড়া এসডিজি অভীষ্ট অর্জনে সবার জন্য পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান এবং শোভন কর্মসুযোগ সৃষ্টি এবং স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার জাগো নিউজকে বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) আওতায় ৬৪টি জেলায় মোট ৭০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বিদ্যমান আছে। ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ চলমান। কারিগরি শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে এবং কারিগরি প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রকল্পটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

তিনি মনে করেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেশ-বিদেশের শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থানের অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি দেশে বিভিন্ন খাতে কর্মসংস্থানের সম্প্রসারণ ঘটবে।

এমওএস/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।