নতুন দুটি সুগার রিফাইনারি স্থাপনে চুক্তি করলো এস আলম গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৩০ এএম, ০৫ এপ্রিল ২০২৩

চিনির চাহিদা মেটাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক বিনিয়োগে আরও দুটি সুগার রিফাইনারি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। নতুন এ রিফাইনারিগুলো স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের খ্যাতনামা ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্ট ও ইপিসি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এসময় উভয় কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের প্রস্তাবিত চিনি রিফাইনারিটি গড়ে তোলা হবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার আজিমপাড়া ইউনিয়নের ইছানগরে এবং ঢাকার রিফাইনারিটি তৈরি হবে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গঙ্গা নগরে। এ রিফাইনারি দুইটি ২০২৫ সালের মধ্যে পুরোদমে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেগুলোর সর্বমোট সক্ষমতা ৬ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন এবং প্রতিটির দৈনিক সক্ষমতা ৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন।

jagonews24

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এ রিফাইনারি দুইটির জন্য যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান ও থাইল্যান্ডের উন্নতমানের যন্ত্র-উপকরণ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এবং এ পদক্ষেপ বাংলাদেশের চিনি রিফাইন ইন্ডাস্ট্রিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।

প্রস্তাবিত দেশের অন্যতম বৃহৎ এ রিফাইনারিগুলোতে নিরাপদ পিউরিফাইড পানির ব্যবহারসহ চিনি রিফাইন করার সর্বাধুনিক কার্বোনেশন প্রযুক্তি, মেমব্রেন ফিল্টার এবং আয়ন এক্সচেঞ্জ রেজিন কার্যকর থাকবে, যাতে সালফার সহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য উপাদান সহজেই দূর করা যায়।

নতুন এ চিনি রিফাইন প্রকল্পে পণ্যের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে আরও থাকবে উচ্চ সক্ষমতার ম্যাগনেটিক সেপারেটর। সম্পূর্ণ অটোমেশন পদ্ধতি ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ৫০ কেজি ট্রেডিং ব্যাগ, ১ হাজার কেজি কমার্শিয়াল ব্যাগ, ১ কেজি ও ১/২ কেজি রিটেইল প্যাকেটে চিনির প্যাকেজিং করা হবে। এছাড়াও উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে আনতে এবং পরিবহন ও সংরক্ষণ ঝুঁকি প্রশমনে রিফাইনারি দুইটি থেকে বেভারেজ ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর জন্য লিকুইড সুগার সরবরাহ করা হবে।

এ রিফাইনারিগুলো তৈরিতে পরিবেশের কথা সবচেয়ে বেশি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আর তাই ফ্যাক্টরি দুইটিতে শিল্পবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা হবে রোটারি লাইম ক্লিন এবং ব্রাইন রিকভারি প্ল্যান্ট। সবমিলিয়ে এ প্রকল্প দুইটি পরিবেশবান্ধব ও উৎপাদিত চিনি মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়। এ প্ল্যান্ট দুইটি দেশের চিনির চাহিদা মেটাতে ও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। চিনি রিফাইনারিগুলো তৈরিতে সার্বিক তত্ত্বাবধান করবে উল্লেখিত খ্যাতনামা ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্ট ও ইপিসি প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্প দুইটিতে প্রায় সম্পূর্ণ বিদেশি অর্থায়ন থাকবে।

দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টনের মতো এবং চিনির চাহিদা বেড়ে চলায় বাজারে কখনো কখনো অস্থিরতা দেখা দেয়। এস আলম গ্রুপের এই নতুন রিফাইনারি দুইটি চিনি রিফাইন প্রক্রিয়া শুরু করলে তা ভোক্তা পর্যায়ে সুলভ মূল্যে চিনি সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উপরোক্ত রিফাইনারি সমূহ ছাড়াও এস আলম গ্রুপ দেশের উত্তরাঞ্চলে (রংপুর ও দিনাজপুর) এবং ফরিদপুরে দুইটি বৃহৎ রিফাইনারি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার মাধ্যমে স্থানীয় কৃষক হতে সংগৃহীত আখ অথবা কারখানায় উৎপাদিত অন্যান্য কাঁচামাল দ্বারা যথাক্রমে চিনি উৎপাদন ও রিফাইন করে তা সরবরাহ করা হবে।

এস আলম গ্রুপ এর মহাব্যবস্থাপক আখতার হাসান এ সম্পর্কে বলেন, দেশের ভোক্তাদের জন্য মানসম্পন্ন চিনির সরবরাহ নিশ্চিত করতে এ রিফাইনারি দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আশা করছি নির্ধারিত সময়েই চিনি রিফাইনারি দুইটি কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে এস আলম গ্রুপ চিনির মতো অন্যান্য ভোগ্যপণ্যও সুলভ মূল্যে পর্যাপ্ত সরবরাহে অবদান রেখে চলেছে।

আইএইচআর/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।