বিবিএস-এর দাবি: তিন মাসে বেকার কমেছে ৭০ হাজার
সাত দিনে এক ঘণ্টা কাজ করলেই বেকার নয়। এমন মানদণ্ড দেখিয়ে দেশের বেকার জনগোষ্ঠী কমে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংস্থাটির ত্রৈমাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে বেকার কমেছে ৭০ হাজার। দেশে বেকার কমলেও শ্রমশক্তি বেড়েছে। উল্টো দিকে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী।
রোববার (২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘কোয়ার্টার্লি লেবার ফোর্স সার্ভে ২০২৩’ থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বিবিএসের ত্রৈমাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে বেকার কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৩০ হাজারে। এর আগের প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) দেশের বেকার সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে বেকার কমেছে ৭০ হাজার। সেপ্টেম্বর শেষে বেকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে পুরুষ সবচেয়ে বেশি। দেশে এখন বেকারদের মধ্যে ১৬ লাখ পুরুষ, আর ৮ লাখ ৩০ হাজার নারী।
বিবিএস বলছে, বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই, যারা গত ৭ দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টাও কোনো কাজ করেনি। কিন্তু কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং গত ৩০ দিনে বেতন বা মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে দেশে বেকারত্বের হার কমে ৩ দশমিক ৩১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর আগে জুন প্রান্তিকে বেকারত্বের হার ছিল ৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।
বেকার কমলেও দেশের শ্রমশক্তি বেড়েছে গত তিন মাসে। বর্তমানে দেশে শ্রমশক্তিতে যুক্ত রয়েছেন ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার। জুন শেষে এ সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৩২ লাখ ১০ হাজার। শ্রমশক্তি বলতে বোঝায়, ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী ও বেকার জনগোষ্ঠীর মোট সমষ্টি।
কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী বলতে বুঝায়, গত সাত দিনে যারা কমপক্ষে এক ঘণ্টা কাজ করেছেন বা কমপক্ষে একটি মুরগী পালন করেছেন। সে হিসাবে দেশে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীও বেড়েছে। ২০২৩ সালের নয় মাস শেষে দেশে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার। এর আগে জুন শেষে এ হার ছিল ৭ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার।
তবে শঙ্কার বিষয় হলো, দেশের শ্রমশক্তির বাইরে অবস্থিত জনগোষ্ঠীর পরিমাণ বাড়ছে। শ্রমশক্তির বাইরে জনগোষ্ঠী বলতে বোঝায়, যারা কর্মে নিয়োজিত নন আবার বেকার হিসেবেও বিবেচিত নন। বিশেষ করে ছাত্র, অসুস্থ, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত ও গৃহিণীরা এ হিসাবের অন্তর্ভুক্ত।
বিবিএস বলছে, গত তিন মাসে এমন জনগোষ্ঠী বেড়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার। সেপ্টেম্বর শেষে শ্রমশক্তির বাইরের জনগোষ্ঠী ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৪০ হাজার। জুন শেষে এ হার ছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার।
এছাড়া শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী জনগোষ্ঠীর হারও কমে যাচ্ছে। দেশে এখন শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। জুন শেষে এ হার ছিল ৬০ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অথচ ২০২২ সাল শেষে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ছিল ৬১ দশমিক ২০ শতাংশ।
এমওএস/এমএইচআর/জিকেএস